২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্তের পর ২০২১ সালের আগস্ট মাসের প্রথম ১০ দিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪৭৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রতিদিন গড়ে মারা গেছেন ২৪৮ জন। এই ১০ দিনে ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৮ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৬৮৪ জন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদুল আজহায় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বাড়ি ফেরা এবং হঠাৎ পোশাক কারখানা খোলায় যেভাবে জনসমাগম হয়েছে, তাতে সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা আছে। সংক্রমণ বাড়লে বাড়বে মৃত্যুও।
গত জুলাই মাসের প্রথম ১০ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৬৮৬ জন। প্রতিদিন গড়ে মারা গেছেন ১৬৯ জন। ওই ১০ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৬ হাজার ৫৭ জন। প্রতিদিন গড়ে ৯ হাজার ৬০৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
জুন মাসের প্রথম ১০ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৭০ জন। প্রতিদিন গড়ে মারা গেছেন ৩৭ জন। ওই ১০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৮৫৭ জন। প্রতিদিন গড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৮৬ জন।
সার্বিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. চিশতি বলেছেন, ‘করোনার সংক্রমণ কমেছিল। হঠাৎ পোশাক কারখানা খোলার সিদ্ধান্তে রাতারাতি যেভাবে মানুষের ঢল ঢাকার দিকে এসেছে, তাতে ঢাকায় করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু আরও বেড়ে যেতে পারে। এই আগস্টেই ভয়াবহ হতে পারে ঢাকার পরিস্থিতি।’
আরেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আইইডিসিআরের সাবেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বর্তমান উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘কোরবানির ঈদের সময় লকডাউনে যে শিথিলতা ছিল, তার প্রভাব আগস্ট মাসে পড়বে। পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার কারণে গত কয়েক দিনে যে পরিমাণ জনসমাগম হয়েছে, বাইরে থেকে গাদাগাদি করে মানুষজন ঢাকায় ফিরেছে, এর কারণেও করোনার সংক্রমণ বাড়বে।’
ডা. মুশতাক আরও বলেন, ‘বিভিন্নভাবে দলে দলে মানুষ ঢাকা ছাড়ার পাশাপাশি লাখ লাখ মানুষ গাদাগাদি করে ঢাকায় ফিরেছে। এসব কারণে মূলত সংক্রমণ বেড়েছে। এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১০ আগস্ট (মঙ্গলবার) ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় মারা গেলেন মোট ২৩ হাজার ১৬১ জন। মঙ্গলবার ১১ হাজার ১৬৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ লাখ ৭৬ হাজার ৩২২ জন। আক্রান্তের হার ২৩.৫৪ শতাংশ।