১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার শৈশব আর কৈশোর কেটেছে সবুজ শ্যামল ছায়ায় ঘেরা এই টুঙ্গিপাড়ায়। এখানে রয়েছে তার অজস্র স্মৃতি।
বঙ্গবন্ধুর সেই স্মৃতি এখানো বয়ে বেড়াচ্ছে টুঙ্গিপাড়ায় অবস্থিত মধুমতি নদীর পাটগাতি ও বাঘিয়ার নদীর ঘাট। স্মৃতি সংরক্ষণে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এ নদীতে দুটি ঘাট নির্মাণ করা হয়েছে। টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার উদ্যোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ঘাট দুটি নির্মাণ করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব আর কৈশর কেটেছে টুঙ্গিপাড়ায়। পরে রাজনৈতিক জীবনে প্রবেশ করলে ঢাকায় অবস্থান করতেন বঙ্গবন্ধু। এসময় বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন সময়ে ঢাকা থেকে লঞ্চ বা স্টিমারে করে নিজ বাড়ি টুঙ্গিপাড়ায় আসতেন। মধুমতি নদীর পাড়ে পাটগাতি বাজার সংলগ্ন লঞ্চঘাট অথবা বাঘিয়ার নদীর পাড়ে খাদ্য গুদামের পাশে নামতেন বঙ্গবন্ধু। পরে পায়ে হেঁটে বাড়িতে যেতেন। আবার যখন ঢাকায় ফিরতেন, তখন ওই ঘাট দুটির যে কোনো একটি দিয়ে স্টিমার বা লঞ্চে উঠতেন।
ঘাট দুটিকে সংরক্ষণ করে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা উদ্যোগ গ্রহণ করে। পরবর্তী সময়ে গোপালগঞ্জের স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর পাটগাতির ঘাটটি ৯ কোটি আর টুঙ্গিপাড়ার ঘোপেরডাঙ্গায় খাদ্য গুদামের পাশের ঘাটটি ৪ কোটি টাকা ব্যয় করে আধুনিক লঞ্চঘাটে পরিণত করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের মামাতো ভাই শেখ বোরহান উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতির জনক হওয়ার আগে তিনি যখন ঢাকায় থাকতেন, তখন তিনি স্বাভাবিকভাবে স্টিমার বা লঞ্চে করে টুঙ্গিপাড়ায় এসে এঘাট দুটির যে কোনো একটিতে নেমে বাড়ি আসতেন। এমনকি পরিবারের সবাইকে নিয়েও বাড়ি আসার সময়ও এই ঘাট দুটি ব্যবহার করতেন। তবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার এসব স্মৃতি অবহেলিত ছিল। এখন এ ঘাট দুটি সংরক্ষণ করা হয়েছে। এতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি রক্ষা পাওয়ার সাথে সাথে তার সম্পর্কে জানতে পারবে নতুন প্রজন্ম।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন ঢাকায় ছাত্র রাজনীতি করতেন, তখন তিনি লঞ্চে করে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া আসার সময় এ ঘাট দুটি ব্যবহার করতেন। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি রক্ষার্থে ও নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আমরা ঘাট দুটি সংরক্ষণ করেছি।
গোপালগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এহসানুল হক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য পাটগাতি ও টুঙ্গিপাড়ার খাদ্য গোডাউনের পাশে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ঘাট নির্মাণ করা হয়েছে। টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের সমাধিসৌধ দেখতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এই ঘাট দুটিও দেখে বঙ্গবন্ধুকে অনুধাবন করতে পারবেন বলে মনে করি।