একটি লেখা প্রকাশিত হওয়ার জেরে ফের শাস্তি পেলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) মো. মাহবুব কবীর মিলন।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক এই অতিরিক্ত সচিবকে বিভাগীয় মামলায় দণ্ড হিসেবে তিরস্কার করে সম্প্রতি (গত ১১ আগস্ট) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পদ থেকে তাকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ে আলোচিত কর্মকর্তা ছিলেন মাহবুব কবীর। ‘তিন মাসে দুর্নীতি দূর করতে ১০ কর্মকর্তার উইং’ চেয়ে আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মাহবুবকে ‘তিরস্কার’ করে সরকার।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের আগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ছিলেন মাহবুব কবীর। এ পদে থাকার সময় ভেজাল বিরোধী খাদ্য উৎপাদন ও বিপণন বন্ধে জোরালো ভূমিকা রেখে প্রশংশিত হন মাহবুব কবীর।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মাহবুব কবীর রেলপথ মন্ত্রণালয়ে কর্মকালে তার উদ্ধৃতি দিয়ে eisomoy365.com নামের অনলাইন পত্রিকায় ‘বিনিয়োগ করতে এসে হু হু করে কাঁদতে দেখেছি বিদেশিদের’ শিরোনামে একটি লেখা প্রকাশিত হয়। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত পত্রিকায় প্রকাশিত এ লেখায় তার মনগড়া, ভিত্তিহীন ও সরকারের জন্য অস্বস্তিকর বক্তব্য প্রকাশিত হওয়া সরকারি কর্মচারী হিসেবে তার আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল হওয়ায় তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত কর্মকর্তা মাহবুব কবীরের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া বিভাগীয় মামলায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী পাঠানোর মাধ্যমে তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর তিনি ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর লিখিত জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানির প্রার্থনা করেন।
বিভাগীয় মামলায় একই বছরের ২২ অক্টোবর ব্যক্তিগত শুনানি অনুষ্ঠিত হয় উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এসময় মামলার অভিযোগ লিখিত জবাব ও ব্যক্তিগত শুনানিতে দেওয়া উভয় পক্ষের বক্তব্য বিবেচনায় অভিযোগটি তদন্তের জন্য বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কে.এম. তারিকুল ইসলামকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা থেকে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে মাহবুব কবীররের বিরুদ্ধে আনীত সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অসদাচরণেরর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এবং অভিযোগের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক প্রশাসনিক বিষয়াদি বিবেচনায় সরকারি কর্মচারী বিধমালা মোতাবেক তাকে তিরস্কার নামীয় লঘুদণ্ড প্রদানের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে এ লঘুদণ্ড আরোপের বিষয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন।
এতে আরও বলা হয়, মাহবুব কবীরের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিরস্কার নামীয় লঘুদণ্ড দেওয়া হলো।