লিনা দিলরুবা শারমিন ঢাকা, ১৭ মার্চ : টিএসসিতে দেখা করার কথা তিন বন্ধু রনি, সাব্বির আর নির্ঝরের। নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছে গেল নির্ঝর। অপেক্ষা এবার রনি আর সাব্বিরের জন্য। সময় পেরিয়ে যায়, কিন্তু দেখা নেই ওদের। অপেক্ষা করতে করতে একসময় বিরক্তি এসে যায়। রাগের মাথায় বাড়ি চলে যায় মেয়েটি।
রনি আর সাব্বিরের শত অনুরোধও আটকে রাখতে পারল না তাকে। এ ঘটনা ধরেই তৈরি হয় সম্পর্কের দূরত্ব। একসময় ছিঁড়ে যায় বন্ধুত্বের মূল্যবান সম্পর্কের সুতোটি।
বন্ধুত্ব নিয়ে তরুণদের মাঝেমধ্যেই পড়তে হচ্ছে এমন কিছু সমস্যায়। সামান্য ঘটনা থেকেই তৈরি হয় মনোমালিন্য, আর তারপর বহুদিনের পুরোনো সম্পর্কটা হয়ে যায় একেবারেই অপরিচিত। অনেকেরই ধারণা, বন্ধুত্ব একটি দাবিহীন সম্পর্ক। কিন্তু বাকি সব সম্পর্কের মতো বন্ধুত্বের জন্যও চাই পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর সুস্থ চর্চা।
বন্ধুর সঙ্গে এমন সমস্যা তৈরি হলে খুব তাড়াতাড়ি সেটা ঠিকও করে নিতে হবে। একবার দূরত্ব তৈরি হয়ে গেলে পরবর্তী সময়ে সম্পর্ক ঠিক হওয়ার ব্যাপারটা অনিশ্চিত হয়ে যায়। বন্ধুর মান ভাঙানোর জন্য করতে পারেন এমন কিছু, যা সে ভালোবাসে। রাইজিংবিডির পক্ষ থেকে আপনার জন্য এ বিষয়ে আছে কিছু টিপস-
বন্ধুকে সময় দিন :
ভুল-বোঝাবুঝি, ঝগড়া বা মান-অভিমান যাই হোক, সেটা সে সময়ই শেষ করে ফেলুন। পরেরবার কথা বলার সময় বা দেখা হলে আগের বিষয়টি কোনোভাবেই টেনে আনবেন না। তাতে অকারণে অস্বস্তি তৈরি হবে।
বন্ধুর সমস্যা বুঝতে চেষ্টা করুন :
ঠিক কী কারণে আপনার বন্ধুটির অভিমান হয়েছে, তা বুঝতে চেষ্টা করুন। অনেক সময় ব্যক্তিগত সমস্যা থেকেও মানুষ অস্থির থাকে। সে ক্ষেত্রে তার সমস্যা সমাধান করতে চেষ্টা করুন। তা না পারলে আপনি যে তার পাশে আছেন, সেটা বুঝিয়ে দিন।
উপহার দিন :
বন্ধু গাল ফুলিয়ে বসে আছে তো! তাকে দিতে পারেন ছোট্ট কোনো উপহার। দুটো গোলাপের সঙ্গে ছোট্ট একটা চিরকুট গুঁজে দিন তার হাতে। আপনি যে আপনার কাজে অনুতপ্ত, সেটা বুঝলে আপনার বন্ধুটি নিশ্চয়ই আর রাগ করে থাকবেন না।
নিজে থেকে এগিয়ে যান :
সম্পর্ক সহজ করতে যেকোনো একজনকে এগিয়ে যেতেই হবে। আমি আগে না তুমি আগে- এই বিষয়টি বাদ রেখে নিজেই এগিয়ে যান। তাতে কারো বড় বা ছোট হওয়ার কিছু নেই। বরং আপনার জন্য শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বাড়বে বন্ধুটির।
তৃতীয় ব্যক্তির সাহায্য নেবেন না :
বন্ধুত্বের সমস্যাগুলো নিজেরাই সমাধান করুন। এ ক্ষেত্রে তৃতীয় কারো সাহায্য নিলে একদিকে যেমন নিজেদের কথা বাইরের লোকে জানবে, অন্যদিকে আপনার বন্ধুরা ব্যাপারটি পছন্দ নাও করতে পারেন।
কুৎসা রটানো মানুষ থেকে দূরে থাকুন :
বন্ধুদের নামে কুৎসা রটানো মানুষ থেকে দূরে থাকুন। এদের থেকে নিজে সতর্ক থাকুন, বন্ধুকেও দূরে রাখুন। আপনার মান-অভিমানের সময় এরা যেন কোনোভাবেই সম্পর্কে ঝামেলা না করতে পারে।
বন্ধুর সঙ্গে অভিমান পুষে না রেখে তা মিটিয়ে ফেলুন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। সময়, বয়স আর সম্পর্ক যেমনই হোক, বন্ধুর প্রয়োজন কী আর ফুরায়? তবে অকারণ আর দেরি কেন? আজই মান-অভিমানের পর্ব শেষ করে নিন আর বন্ধুত্ব রাখুন অমর।
রাইজিংবিডি / কে. শাহীন / আবু মো.