হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। পূজা উদযাপনে সারাদেশের ন্যায় রংপুরেও চলছে পুরোদমে প্রতিমা ও পূজা মণ্ডপ তৈরির কাজ। প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা।
রংপুর জেলায় এবার ৯৫৬টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হচ্ছে। এখন বেশির ভাগ মণ্ডপে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। রঙ তুলির আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে মূর্ত করে তোলার চেষ্টায় প্রতিমা শিল্পীরা।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নগরীর বিভিন্ন মন্দির ও মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, দূর্গাপূজা উৎসবকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে চলছে ব্যাপক সাজসজ্জার প্রস্তুতি। প্রতিটি পূজা মণ্ডপের জন্য তৈরি হচ্ছে দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, কার্তিক, গনেশ, অসুর, সিংহ, হাস, পেঁচা, সাপসহ বিভিন্ন ধরণের প্রতিমা। ইতিমধ্যে অনেক মণ্ডপে শুরু হয়েছে প্রতিমা রঙ করার কাজও।
এছাড়া বৃষ্টির হাত থেকে প্রতিমা বাচাতে ত্রিপলের ছাউনি তৈরি করা হয়েছে মণ্ডপে মণ্ডপে।
রংপুর নগরীর চিলমন পূর্বপাড়া শারদীয় দুর্গা মন্দির কমিটির সদস্য গৌরাঙ্গ রায়। তিনি বলেন, ‘প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হচ্ছে। স্থানীয় শিল্পী ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শিল্পীরা এখানে এসে প্রতিমা রঙের কাজ করছেন। ’
নগরীর একটি মন্দিরে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত শিল্পী শ্যামল কুমার পাল। ব্যস্ত সময় পার করতে থাকা এ শিল্পী বলেন, 'প্রতিবছর পূজা শুরুর তিনমাস আগে থেকে প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ততা শুরু হয়। কয়েক মাস দিনরাত সমানে কাজ করতে হয়। আর মাত্র কয়েকদিন বাকি আছে দুর্গাপূজার। প্রতিমা মোটামুটি তৈরি হয়ে গেছে। এখন শুধু রঙ দিয়ে সৌন্দর্য বর্ধিত করতে হবে।’
সদর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব সঞ্জিত কুমার নাড়ু বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে পূজা মণ্ডপের সংখ্যা কোথাও কমে গেছে। সেই সঙ্গে গতবারের থেকে এবার বেড়েছে প্রতিমা কারিগরদের মজুরি। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে দুর্গাপূজা উদযাপন ঘিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ’
রংপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক ধীমান ভট্টাচার্য বলেন, ‘এবার রংপুরে ৯৫৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। এর মধ্যে মহানগরীতে ১৫৪টি ও জেলার আটটি উপজেলায় ৮০২টি মণ্ডপ রয়েছে।’ মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক ধনজিৎ ঘোষ তাপস বলেন, ‘দুর্গাপূজা যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় উৎসব পালন করবো।’
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘প্রতিমা তৈরি, পূজা উদযাপন এবং প্রতিমা বিসর্জনসহ দুর্গাপূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক ও সজাগ রয়েছে। একই সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সার্বিক দিক নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা ও মহানগর কমিটির নেতাদের সঙ্গে স্বাস্থবিধি মেনে পূজা উদযাপনের বিষয়টি নিয়েও মতবিনিময় করা হয়েছে।'