শিল্প ও সাহিত্য

ধ্রুব এষের গল্প || আষাঢ়ের বৃষ্টিতে

গত লকডাউনের পর থেকে ইরাব একদিনও বাসার বাইরে যায় নি। ফার্মেসি বন্ধ করে দিয়েছিল। মানুষজনের বিপদ-আপদের কথা চিন্তা করে আবার খুলে দিয়েছে। কর্মচারীরা ফার্মেসি চালায়, ফোনে সে নানান নির্দেশনা দেয়। সিসিটিভি দেখে দরকারে। এস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিন সে নেয় নাই। সাংঘাতিক কথা হলো ভয়ে নেয় নাই। ইনজেকশনের সুই ভয় লাগে তার। খলিল বলেছে ‘ট্রাইপেনোফোবিয়া।’ ‘এইটা কী?’ ‘ইনজেকশন ভীতি।’ খলিলের সঙ্গে কথা হয় না বহুদিন। খলিল বহুদিন ধরে ঢাকায়। অস্থায়ী স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গেছে। টাউনে আসে না খুব একটা। সর্বশেষ কয়েক বছর আগে এসেছিল এবং তার বোন জাহেদার বিয়ে উপলক্ষে। পাগলা। চুল দাড়ি লম্বা এবং সাদা হয়ে গেছে। কলপ দেবে না। বিয়ে করেছিল এক অভিনেত্রীকে। বনে নাই। তাড়িয়ে দিয়েছে। আর বিয়ে করে নাই এখনও। ‘তুই আর বিয়া করবি না?’ ‘না।’ ‘কেন রে ভাই?’ ‘শিক্ষা হয়ে গেছে।’ ‘এইটা কোনও কথা! পৃথিবীর সব মানুষ কি এক রকম বল?’ ‘আমার জন্য সব এক রকম।’

ঢাকায় বাস করে, মিডিয়ায় আছে, গোপন জগৎ কতটুকু তার? সুলুক রাখে কে? নিজেই অবশ্য সব বলে দেয় বন্ধুদের। কনফারেন্স কল করে বলে, ‘মারিয়া ভুজঙ্গ তীর। কলিজা করিল চৌচির।’ কে সেই ‘সুন্দরী’ কে-এ-এ-এ? ‘মেঘের নাকফুল।’ ‘তার নাম মেঘের নাকফুল?’ ‘আমি রাখছি।’ ‘অ।’ ‘মেঘের নাকফুলের মতো। চিরকালীন। হা। হা। হা।’ আরেক দিন মেঘের নাকফুল নাই। ‘ঘ্রাণ।’ আরেক দিন ঘ্রাণ নাই। ‘কবিনি।’ আরেক দিন...। চলছে। চলবে? কতদিন? এখন কার সঙ্গে সম্পর্ক খলিলের? ‘গার্লস স্কুলের মিসট্রেস। হা! হা! হা!’ গার্লস স্কুলের মিসট্রেস রিটায়ার্ড। বয়স ৬০…। ছেলে মেয়ে বিদেশে। বর্তমানে সিঙ্গেল। খলিল থাকবে রিটায়ার্ড মিসট্রেসের সঙ্গে?

মেঘ ডাকল। অগ্নি নৈঋতে ঈষাণে মেঘদল। দেখে কী মনে হলো ইরাবের? হায়েনার দল গুড়ি মেরে আছে। ট্রাইপেনোফোবিয়া। আর কী কী ফোবিয়ার নাম পারে খলিল? আর কোনোদিন কি খলিলের সঙ্গে প্রাণ খুলে কথা বলা যাবে না? গণ-বিষাদ। খলিল বলেছে। কোভিড-১৯ জনিত গণ-বিষাদ। পৃথিবীজুড়ে। হতে পারে। ইরাবের মনে হয় সব বিষাদ তার একার। এত বিষাদ। খলিল কি ফ্রি আছে এখন? কল দিলে ধরবে, চিল্লাবে। খলিলের নাম্বার ফোনে নাই আর। আবরেশমী ডিলিট করে দিয়েছে। সমস্যা নাই, মুখস্থ নাম্বার। কল দিলো ইরাব। খলিল ধরল- ‘কী রে ভাই?’ ‘এই তো রে ভাই। তুই কেমন আছিস?’ আবার মেঘ ডাকল। খলিল বলল, ‘মেঘ ডাকে রে?’ ‘হ্যাঁ। হায়েনার দলের মতো মেঘ গুড়ি মারছে আকাশে।’ ‘কী বললি কী বললি তুই? কোভিড-১৯ তোরে দেখি কবি করে দিছে রে। হায়েনার দলের মতো মেঘ গুড়ি মারছে। বাহ্! এই লকডাউনে তুই আর ছবি তুলিস নাই?’ ‘না রে।’

গত লকডাউনে একটা হলুদ পাখি এবং সন্ধ্যার কিছু ছবি তুলেছিল ইরাব। টাউনের আশ্চর্য সন্ধ্যা। হোয়াটস অ্যাপে সেন্ড করেছিল ইরাবকে। তিক্ত কিছু তখনও ঘটে নাই। দেখে মুগ্ধ হয়েছিল খলিল, ‘তুই শালা ফটোগ্রাফি করলে এতদিনে বিনেবল-মরিস হয়ে যেতে পারতি।’ ‘এ কে?’ ‘পৃথিবী বিখ্যাত ফটোগ্রাফার ব্যাটা। গোধূলির ছবি তুলে বিখ্যাত।’ সেই প্রাণ গেছে। আবরেশমী ফোন করেছিল একদিন। সকালে, খলিলকে। ইরাবের নাম্বার থেকে। খলিল ইরাব মনে করে ধরেছে, ‘তুই! এখন!’ ‘আমি।’ ‘আবরেশমী? কেমন আছ?’ ‘ভালো আছি। আপনি।’ ‘ইরাব কই?’ ‘আপনি আগে আমার কথা শোনেন…।’ ‘কী বলো? কী হইছে?’ ‘কী হইছে! আপনি কী ছবি তারে পাঠাইছেন?’ ‘কী ছবি পাঠাইছি?’ ‘কী ছবি পাঠাইছেন আপনি জানেন না? সে বাথরুমে ঢুকে দেখছে…।’ ‘তুমি দেখ নাই?’ ‘না, আমি কেন দেখব?’ ‘না দেখলে তুমি কী করে বুঝলা আমি কী ছবি পাঠাইছি?’ ‘বেশি কথা বলবেন না। আপনি জানেন না আমরা ম্যারিড। আমাদের একটা সন্তান।’ ‘তা জানব না। তোমরা ম্যারিড। ম্যারিড না হলে কি আর সন্তান হয় তোমাদের। তোমরা কি আর সন্তান নিবা না? একটা মেয়ে নিলে পারো কিন্তু। তোমার আর ইরাবের মেয়ে হলে সে ডাকোটা ফ্যানিং-এর মতো রূপবতী হবে। আমি শিওর। টুয়াইনাইট সাগা দেখছ? ডাকোটা ফ্যানিং ওয়ারউলফ হয়েছে। রূপবতী ওয়ারউলফ। তোমাদের মেয়ে অবশ্য ওয়ারউলফ হবে না। হা হা হা!’ ‘খবরদার! আপনি হাসবেন না!’

লাউড স্পিকার অন ফোনের। ইরাবের মাথা কাটা যাচ্ছিল। তার সামনে এটা কেন করছে আবরেশমী? ইরাবের শুধু বন্ধু খলিল? ভাই। আবরেশমী শব্দের অর্থ স্নিগ্ধ। এই হলো স্নিগ্ধতার নমুনা। মারাত্মক সন্দেহপ্রবণ আবরেশমী। জটিলা কুটিলা। চিন্তা করে না যে সে যা ভাবে এবং বলে, সেসব করার মতো সময় কোথায় ইরাবের? ফার্মেসিতে যখন বসে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা। দুপুরে বাসায় ভাত খেয়ে যায় শুধু। ছেলে বড় হয়ে যাচ্ছে, দেখাশোনা করতে পারে না, আফসোসে মরে ভেতরে ভেতরে। কার সঙ্গে প্রেম করবে সে কখন?

পলিনের একটা ছবি নিয়ে ঘটনা। নস্টালজিয়া পলিন। আমেরিকায় থাকে এখন। মিনিয়াপোলিসে। জামাই আফ্রিকান আমেরিকান। আবরেশমীকে ইরাব ঘুণাক্ষরেও পলিন সম্পর্কে কিছু বলে নাই। আগের লকডাউনে আকস্মিক যোগাযোগ। হোয়াটস অ্যাপে কল দিয়েছিল পলিন। ভিডিও কল। বাপের বাড়িতে ছিল আবরেশমী। কথা আর ফুরায় না নস্টালজিক দুজনের। কেউ বলবে বয়স হয়ে গেছে পলিনের?

‘তুমি সেইরকম আছো ইরাব ভাই। বিংগো! কিয়ানু রিভসের মতো তুমি দেখতে। ওয়েসকারের সঙ্গে যদি কোনোদিন আমার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়, বিশ বছর পরে হলেও, আমি তোমাকে বিয়ে করব, টাচ উড। হি-হি-হি! তোমার বউ একথা শুনলে কি আমাকে জবাই করে ফেলবে?’ জবাই শুধু? এক ছবি দেখেই যা করল আবরেশমী। উন্মাদিনী হলো, ‘এই মেয়ে কে? এর ছবি তোমার ফোনে কেন? বলো এই হারামজাদী কে?’ কী বলবে ইরাব? ‘খলিলের বন্ধু।’ ‘খলিলের বন্ধু। তার নাম কী?’ ‘এঞ্জেলিনা জোলি।’ ‘তুমি আবার দুলাভাই না। আমি তোমার সাথে মশকরা করতেছি না। নাম কী বলো এই বান্দির বেটির।’ গল্প কবিতা সাহিত্য পড়ে না ইরাব। পত্রিকার সাহিত্য পাতা দেখে। এক কবিনির নাম দেখে মনে আছে। বলে দিলো সেটাই, ‘রোকসানা আফরিন।’ ‘এই মেয়ের নাম রোকসানা আফরিন!’ ‘মেয়ে না মহিলা। সাতচল্লিশ-আটচল্লিশ হবে বয়স। আমাদের চার-ছয় বছরের ছোট।’ ‘বা! বা! বা! বয়সও মুখস্থ করে বসে আছো দেখি।’

পলিনের ছবি অবশ্য বাথরুমে ঢুকে দেখে নাই ইরাব। তার এক পার্টনারের একটা হান্ডুল বান্ডুল ছবি দিয়েছিল খলিল। আবরেশমী দেখলে খুন করে ফেলবে। বাথরুমে না ঢুকে কী করবে ইরাব? কিন্তু সে বাথরুমে ঢুকে ছবি দেখেছে, এটা কে বলল আবরেশমীকে? যা করল। খলিল একটা কথা বলেছিল একদিন। সাইকোলজিক্যাল ডিজঅর্ডারঅলাদের সিক্সথ সেন্স প্রবল হয়। হতে পারে। মাঝেমধ্যে ইরাবের মনে হয় পলিন কি তার মগজের ভেতরে ঢুকে যায়? আলাদা আলাদা করে নিউরোন দেখে? কী নাজেহাল করল খলিলকে। আগে থেকেই দেখতে পারে না, খলিল কেন তাকে নাম ধরে ডাকে এবং তুমি করে বলে? আর কেউ তো এরকম না। মনা ভাই, খোকন ভাইরা। বন্ধুর বউকে ‘তুমি’ করে বলা কি স্মার্টনেস? নাম ধরে ডাকা? আবরেশমী মনে করে, অসভ্যতা। অসভ্য লোক খলিল। সর্বনাশ করে দিচ্ছে তার সংসারের। ‘আপনি আর তারে ফোন দেবেন না। কোনোদিন না।’ ‘কারে?’ ‘কারে বোঝেন নাই? নাবিলের আব্বারে।’ ‘ইরাবরে?’ ‘হ্যাঁ।’ ‘সেটা তুমি বলার কে আবরেশমী?’ ‘আমি তার ওয়াইফ!’ ‘তুমি তার ওয়াইফ আমি তার বন্ধু। ভাই। তোমাদের বিয়া হইছে কয়দিন? তুমি বেশি চিনে ফেলছ তারে? সন্দেহ করতে করতে তো দিছ বারোটা বাজিয়ে। শোনো তোমারে একটা কথা বলি, তোমার জামাইরে কী মনে করো তুমি ফেরেশতা সে।’ ‘রাখেন আপনি! মুসাবিদা করতে আসছে! ফরিসতা? এহ্। আপনি আর ফোন করবেন না তারে। আর কোনো কথা নাই। আর যদি ফোন করেন আমি আপনার নামে মামলা দিব।’ ‘কী মামলা দিবা? সাইবার আইনে?’ ‘চুপ করেন আপনি অসভ্য লোক। আমি তার ফোন থেকে আপনার নাম্বার চিরতরে ডিলিট করে দিতেছি…।’ ‘দাও। তোমার জামাইয়ের সাথে কে কথা বলে? কোন খানের কী একটা আসছে! বেয়াদবের বেয়াদব! ফোন রাখ বেয়াদবের ডিম!’

আবরেশমী আর কথা বলে নাই। খলিলের দুটা নাম্বার, ইরাবের ফোন থেকে ডিলিট করে দিয়েছে। উদ্ধার করেছে! চোখ জ্বালা করে উঠেছিল ইরাবের। কী মনে করে খলিল? তার বন্ধু, তারা ভাই। আবরেশমী কী করল! ছিঃ। ইরাব আর কোনোদিন কথা বলতে পারবে খলিলের সঙ্গে? মনা কল দিলো। দুই খোকন। খলিল তাদের ফোন করেছিল। ইরাবকে কল দিতে বলেছে। দুই দিন পর কল দিয়েছিল ইরাব, ‘কী রে ভাই?’ ‘আর কী! ভাই বড় ধন/ রক্তের বাঁধন/ যদিবা পৃথক হয়/ নারীর কারণ। হা! হা! হা!’ এই হলো খলিল। পাগলা। সারাজীবন। ‘এই!’ অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিল ইরাব। বলল, ‘অ্যাঁ? হ্যাঁ। বল।’ ‘কী হইছে তোর?’ এত মায়া করে আর কেউ বলে? চোখ ভিজে যাবে ইরাবের। আকাশ দেখল সে। নৈঋত বায়ুর ব্র্যাকেট কালো হয়ে গেছে। বৃষ্টি এই নামল, এই… নামল। ইরাব বলল, ‘বৃষ্টি।’ ‘নামছে।’ ‘হ্যাঁ।’ ‘ভিজ।’ ইরাব হাসল, ‘সেই বয়স আর আছে রে ভাই?’ ‘বয়স? কীসের? বয়স কী? বয়স্ক মানুষের বৃষ্টিতে ভিজার নিয়ম নাই? আমার তাহলে বয়স হয় নাই।’ ‘তোর হয় নাই…।’ বৃষ্টি তুমুল হলো লহমায়। কথা শোনা যায় না খলিলের। খলিল কি তার কথা শুনছে? খলিলের একটা কথা শুনল সে, ‘বৃষ্টির শব্দ শোনা।’ বৃষ্টির দিকে মোবাইল ফোন ধরে রাখল ইরাব।

ঝুম বৃষ্টির সঙ্গে অন্ধকারও নামল। অসন্ধ্যার অন্ধকার। সন্ধ্যা হয়ে যাবে। লাইট জ্বলল দোতলার এর তার ঘরে। নিচতলার বারান্দায় বসে আছে ইরাব। হাতলঅলা লম্বা বেঞ্চে। বড় আব্বার বানানো বেঞ্চ। লাগোয়া রুমে বড় আব্বা থাকতেন। বড় আব্বা। নিচতলায় এখন কেউ থাকে না। মেহমান এলে ঘরদোর খোলা হয়। দোতলায় আব্বা আম্মা বড় ভাই ইরাব থাকে। এল প্যাটার্নের পুরনো বিল্ডিং। বড় ভাইয়ের দুই মেয়ে মাইশা মেহেক। দুই বোন একটা ঘর নিয়ে থাকে। নাবিল দুই বোনের বিরাট ন্যাওটা। পায়ে পায়ে ঘুরে। আবরেশমী যদিও পছন্দ করে না।

মাইশা মেহেকের ঘর এখান থেকে দেখা যায়। মেহেক আর নাবিল বারান্দায়। ভাইকে বৃষ্টির কণা ধরে দিচ্ছে মেহেক। আবরেশমী উদিত হলো। মেহেক-নাবিলকে কিছু বলল। ধমক না। মেহেক নাবিলের কার্যক্রম অব্যাহত থাকল। আবরেশমী?

সে বসে আছে অন্ধকারে। তাও আবরেশমী তাকে দেখছে, মনে হলো ইরাবের। অন্ধকারে আবরেশমী বিড়াল হয়ে যায়। সচকিত ইরাব উঠল। বৃষ্টির ছাঁটে ভিজে যাচ্ছে সে। খলিল কি বৃষ্টির শব্দ শুনছে? ফোন যে সে অফ করে নাই সেই খেয়াল থাকল না ইরাবের। ত্রস্ত সে দোতলায় উঠল। বৃষ্টি আরও তুমুল হলো নাকি? তার কেউ আর বারান্দায় নাই। মেহেক, নাবিল, আবরেশমী। ঘরে ঢুকে গেছে। বৃষ্টির কিছু তেরছা ছাঁট একদম কাকভেজা করে দিল ইরাবকে। তাদের ঘরে ঢুকে সে দেখল নাবিল ভিডিও গেমস খেলছে এবং আবরেশমী ফোনে কথা বলছে। আবরেশমী দজ্জাল হলেও সুন্দরী। ঝিকঝিক করছে তার হাসি হাসি চোখ মুখ। কার সঙ্গে এত খুশি হয়ে কথা বলছে? বাপের বাড়ির কেউ?

‘… আরে না। এইসব আপনি বলেন খলিল ভাই? টাউনে আপনার থাকার জায়গা নাই মানে?’ কোন খলিলের সঙ্গে কথা বলছে আবরেশমী। তার আর কোনো খলিল ভাই আছে? ইরাব খলিল নামে আর কাউকে চিনে না। ‘...এই দেখো, জাহেদাও নাই। জাহেদাও নাই তো কী হইছে খলিল ভাই, আপনি আমাদের বাসায় থাকবেন। জাহেদা আপনার বোন আমি বোন না?’ জাহেদা মানে? খলিলের সঙ্গেই কথা বলছে আবরেশমী। ‘...আপনার বন্ধুর সাথে কথা বলবেন? বলবেন না? হি... হি... হি...! আচ্ছা খলিল ভাই, রাখি। স্লামালিকুম।’ ফোন রেখে আবরেশমী বলল, ‘খলিল ভাই।’ ইরাব বলল, ‘অ।’ ‘অ। তুমি এইখানে দাঁড়িয়ে আছ কী করতে? মেঝেতো সয়লাব হয়ে যাইতেছে পানিতে। বাথরুমে যাও। চেঞ্জ করো এসব।’ কী চেঞ্জ করবে? কিছু কি চেঞ্জ করতে চায় ইরাব? এই দৃশ্য থেকে? ‘কী হলো? যাও। পাপড় ভাজি আর চা বানাই।’ এ কোন আবরেশমী! স্নিগ্ধ হয়ে গেছে আষাঢ়ের বৃষ্টিতে! কিন্তু খলিল শালা…।

ফোন নিয়ে ইরাব বাথরুমে ঢুকল। আবরেশমী ওজর করল না। বাথরুমের দরজা আটকে, পানির কল ছেড়ে, ফোন দেখল ইরাব। খলিল এখনও আছে লাইনে। মানে কী? ইরাব ফোন কানে ধরে নিচু গলায় বলল, ‘কী রে?’ সঙ্গে সঙ্গে খলিল বলল, ‘ইস। কতদিন পর বৃষ্টির শব্দ শুনি রে ভাই।’