খেলাধুলা

রিজওয়ান সত্যিকারের একজন যোদ্ধা

শঙ্কা ছিল আগের দিন থেকেই। গায়ে ছিল জ্বর। তবে ম্যাচের আগে জানা গেলো তিনি খেলার জন্য ফিট। এরপর যেন মাঠে এলেন, দেখলেন আর জয় করলেন। বলছি মোহাম্মদ রিজওয়ানের কথা। পাকিস্তানের এই ওপেনার বিশ্বকাপ শুরু থেকেই মাতিয়ে রেখেছেন।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথমে ভারত বধের অন্যতম হোতা, এবার সেমিফাইনালের মঞ্চে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের পিটিয়ে তুলোধোনা করেছেন। অথচ বৃহস্পতিবার দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের ইনিংস শেষে ব্যাটিং পরামর্শক ম্যাথু হেইডেন যা বললেন তাতে আশ্চর্য না হয়ে উপায় নেই। রিজওয়ান ম্যাচের আধাঘণ্টা আগে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কিন্তু যেভাবে পাওয়ার হিটিং আর কব্জির যাদু দেখিয়েছেন তা দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই।

হেইডেন বলেন, ‘ম্যাচ শুরুর এক ঘণ্টা আগে রিজওয়ান হাসপাতাল গিয়েছিল। ওর ফুসফুসে সমস্যা হচ্ছিল। অথচ এক ঘণ্টা পর মাঠে ফিরে কি অসাধারণ ইনিংসটিই না খেলল। একেই যোদ্ধা বলে। অসাধারণ।’

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে রিজওয়ান আর বাবর আজমের ব্যাটে দারুণ শুরু করে পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত থামে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে। বাবর ৩৪ বলে ৩৯ রান করে আউট হলে ভাঙে ৭১ রানের ওপেনিং জুটি। রিজওয়ান তখনো খেলে যাচ্ছিলেন সমান তালে। বাবর আউট হলেও থামেনি তার ব্যাট।

দ্বিতীয় উইকেটে তার সঙ্গী হন ফখর জামান। তবে রানের চাকা থেমে গিয়েছিল। ১৫ ওভারে পাকিস্তান তোলে ১১৭ রান। হাতে ছিল তখনো ৯ উইকেট। ১৬তম ওভারে আসে মাত্র ৫ রান। সেসময় মারতে গিয়ে আউট হন রিজওয়ান। ওপেনিংয়ে নেমে আউট হন ১৮ তম ওভারে। তার ব্যাট থেকে আসে ৫২ বলে ৬৭ রান। ৩টি চার ও ৪টি ছয়ের মার ছিল তার ইনিংসে।

রিজওয়ান আউট হওয়ার পরেই পাকিস্তান আসিফ আলি ও শোয়েব মালিকের উইকেট হারায়। কিন্তু চার-ছয়ের ঝড় তুলে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ফখর। মাত্র ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। অপরাজিত থাকেন ৩২ বলে ৫৫ রান করেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার আর ৪টি ছয়ের মার। শেষ চার ওভারে পাকিস্তান তোলে ৫৪ রান।

পাকিস্তান প্রথম ম্যাচে ১০ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছিল ভারতকে। সেই ম্যাচে রিজওয়ান ৫৫ বলে ৭৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন। পরের চার ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৩, ৮, ৭৯* ও ১৫ রান। আর আজ সেমিফাইনালে করেন ৬৭ রান।

খেলার জন্য তাড়না, এমন নিবেদন দেখাতে পারেন কজন ক্রিকেটার? যার জন্যই হেইডেন বলেছেন, রিজওয়ান সত্যিকার একজন যোদ্ধা।