প্রবাস

নিউ ইয়র্কে ন্যূনতম প্রতি ঘণ্টায় ১৫ ডলার মজুরি হচ্ছে 

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সর্বত্রই শ্রমিকদের মজুরি বাড়ছে। ২০২২ সালের শুরুতেই শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে প্রতি ঘণ্টায় ১৫ ডলার। মজুরি বাড়ার খবরে স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ শ্রমিকদের মাঝে।

নিউ ইয়র্কের তিনটি ডাউনস্টেট কাউন্টি ওয়েস্টচেস্টার, নাসাউ ও সাফোক-এর কর্মীদের ন্যূনতম মজুরি প্রতিঘণ্টা ১৫ ডলারে উন্নীত হবে। নিউ ইয়র্ক সিটিতে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা ২০১৮ সালের শেষ দিক থেকে প্রতিঘণ্টা ১৫ ডলার হারে মজুরি লাভ করছিল। এখন থেকে লং আইল্যান্ডের কাউন্টিগুলো সেই হারে মজুরি লাভ করবে, যা সিটির বর্তমান মজুরি হারের সমপরিমাণ হবে। 

ফাস্টফুড স্টোরের কর্মীর তাদের কাজের জায়গা যেখানেই হোক না কেন তারা সমগ্র নিউ ইয়র্ক স্টেটে ১৫ ডলার হারেই মজুরি লাভ করছে। এর বাইরে স্টেটের অবশিষ্ট যে কোনো স্থানে অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রে কর্মীদের মজুরি বর্তমানে ঘণ্টাপ্রতি ১২.৫০ ডলার, তা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩১ ডিসেম্বর উন্নীত হবে ১৩.২০ ডলার।

২০১৬ সালে স্টেট আইনসভায় পাসকৃত ‘নিউ ইয়র্ক- এর মিনিমাম ওয়েজ প্যাকেজের’ অংশ হিসেবে এবং সাবেক গভর্নর এন্ড্রু ক্যুমোর অনুমোদনে আইনে পাঁচ বছরের মধ্যে মজুরি বৃদ্ধির কথা থাকলেও তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হতে পারেনি। কোভিড ১৯ এর চলমান অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার আওতায় মজুরি বৃদ্ধিও বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পায় এবং কাজে গতি সঞ্চারের জন্য মজুরি বৃদ্ধি আর বিলম্ব না করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

গত বছর স্টেটের কিছু আইনপ্রনেতা ও ব্যবসায়ী গ্রুপ ন্যুনতম মজুরি বৃদ্ধি সংক্রান্ত আইনের সমালোচনা করেন। তারা বলেন যখন তারা মহামারীর কারণে পুরোপুরি ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছে না এবং কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছেন, সে অবস্থায় মজুরি বৃদ্ধি তাদের ওপর প্রচণ্ড এক আঘাত। স্টেট সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি প্রদর্শন করা হয়- স্বল্প আয়ের মানুষগুলোই মহামারীতে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা পিঠ সোজা করে দাঁড়াতে পারছে না।

এ অবস্থায় স্বল্প আয়ের লোকজন ন্যায্য মজুরি পাওয়ার অধিকারী। স্টেট পরিসংখ্যান অনুযায়ী বেসরকারি খাতে মোট কর্মীর মধ্যে মহামারীকালে ১০ লাখ কর্মী কর্মচ্যুত হয়েছিল, যা স্টেটের বেসরকারি খাতের মোট কর্মী সংখ্যার ৫৭ শতাংশ। এসব কর্মী নিয়োজিত ছিল প্রধানত খুচরা ব্যবসা, স্বাস্থ্য সেবা ও আতিথেয়তা বা হসপিটালিটি খাতে। অতএব ক্ষতিগ্রস্ত এই খাতগুলোকে পুনরুদ্ধার করতে হলে কর্মীদের মজুরি বৃদ্ধির মাধ্যমেই তা করা সম্ভব। 

লেবার কমিশনার রবার্টা রিয়ারডন বলেছেন, ‘মজুরি বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে আমরা প্রমাণ করেছি যে সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত এপ্রিলে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যাতে ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে ফেডারেল কন্ট্রাক্টরদের ন্যূনতম প্রতিঘণ্টা ১৫ ডলার মজুরি পরিশোধের বাধ্যবাধকতার কথা বলা হয়েছে।