রাইজিংবিডি স্পেশাল

মুক্তাগাছায় হচ্ছে ৫০ মেগাওয়াটের সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র

গ্যাস ও জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় বেসরকারি খাতে ৫০ মেগাওয়াট গ্রিড টাইড সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পটিতে যৌথভাবে বিনিয়োগ করবে ফ্রান্সের টোটাল ইরেন এসএ, নরওয়ের রিনিওব্যালস গ্রুপ এএস এবং বাংলাদেশের আরবান সার্ভিসেস লিমিটেড। প্রকল্পটি থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ২০ বছরে ১ হাজার ৩১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে।

সূত্র জানায়, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে সরকার।

বেসরকারি খাতে ‘বিল্ড ওন অপারেট (বিওও)’ ভিত্তিতে আইপিপি হিসেবে উদ্যোক্তা সংস্থা মুক্তাগাছায় ৫০ মেগাওয়াট গ্রিড টাইড সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম ১১ টাকা ২০ পয়সা প্রস্তাব করে। এ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২৪৯.৩ একর জমি প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, ভূমি উন্নয়ন, মালামাল পরিবহন এবং পাওয়ার ইভ্যাকুয়েশন ইত্যাদি বিবেচনা শেষে সরেজমিনে প্রস্তাবিত সাইট পরিদর্শন করা হয়। ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করে সাইট পরিদর্শন কমিটি। প্রস্তাবটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কারিগরি কমিটির কাছে পাঠানো হয়। কারিগরি কমিটি ২০১৯ সালের ১ জুন এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রস্তাবটি আর্থিক, বাণিজ্যিক এবং কারিগরিভাবে বিবেচনাযোগ্য।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে মত দেয় যে, ২০২৩ সালে প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের সিওডি’র সময় বিবেচনা করে প্রকল্প স্থান থেকে মুক্তাগাছা ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র পর্যন্ত উদ্যোক্তা নিজ খরচে ২০ কিলোমিটার ১৩২ কেভি ডাবল সার্কিট লাইন এবং ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রে ১৩২ কেভি এআইএস বে নির্মাণের মাধ্যমে পাওয়ার ইভ্যাকুয়েশন করা যেতে পারে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বাবিউবো) সভায় টোটাল ইরেন এসএ, রিনিওব্যালস গ্রুপ এএস এবং আরবান সার্ভিসেস লিমিটেডকে মুক্তাগাছায় ৫০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ট্যারিফ নির্ধারণের সুপারিশসহ বিদ্যুৎ বিভাগে প্রস্তাব পাঠায়। প্রস্তাবের ওপর এ সংক্রান্ত আইনের আলোকে স্পন্সরের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করে চুক্তি সম্পাদন করার বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

কারিগরি কমিটির সুপারিশক্রমে প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ কমিটি উদ্যোক্তার সঙ্গে ২০২১ সালের ১০ নভেম্বরের সভায় দাখিলকৃত ট্যারিফ কমাতে বলে। উদ্যোক্তা সংস্থা প্রাথমিক পর্যায়ের প্রস্তাবিত দর কমিয়ে প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুতের দাম ৮ টাকা ১২ পয়সা ধরে ২০২১ সালের ১২ নভেম্বর সর্বশেষ প্রস্তাব দাখিল করে।

নেগোসিয়েশন কমিটি প্রাইভেট সেক্টর পাওয়ার জেনারেশন পলিসি অব বাংলাদেশ-১৯৯৬ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ (সংশোধন-২০২১)-এর আওতায় বিওও ভিত্তিতে আইপিপি হিসেবে ২০ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপনের জন্য উদ্যাক্তা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করার সুপারিশ করে।

নেগোসিয়েটেড ট্যারিফ অনুযায়ী, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে ‘নো ইলেক্ট্রিক, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে বিদ্যুৎ কেনা হলে ২০ বছর মেয়াদে আনুমানিক ১ হাজার ৩১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে।