পজিটিভ বাংলাদেশ

পেয়ারার এক ফলনে মেহেদীর লাভ ১০ লাখ টাকা 

মেহেদী হাসান। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের একজন তরুণ। সম্প্রতি পেয়ারা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। বদলে গেছে তার ভাগ্যের চাকা। এবারের ফলনে বিঘাপ্রতি দেড় লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করেছেন তিনি। খরচ বাদ দিয়ে লাখ টাকা করে লাভ হয়েছে তার। 

ঘোড়াঘাট উপজেলার রাণীগঞ্জের মহাসড়কের পাশ দিয়ে তৈরি হয়েছে ১০ বিঘা জমির উপর একটি পেয়ারা বাগান। এটি তৈরি করেছেন মেহেদী হাসান, নিজেকে স্বাবলম্বী করার আশায় তার পেয়ারা চাষ। দেড় বছর আগে তিনি এই ১০ বিঘা জমিতে সাড়ে ৪ হাজার থাই জাতের পেয়ারার চারা লাগান। চারা লাগানোর ৬ মাসের মধ্যে প্রতিটি গাছে পেয়ারা ধরতে থাকে। আবার ৬ মাসের মধ্যে পেয়ারা বাজারজাত করেছেন তিনি। প্রায় ১৫ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করেন। খরচ হয়েছে মাত্র ৫ লাখ টাকা। 

এদিকে গাছ থেকে পেয়ারা পেড়ে বাজারজাত করার সাথে সাথে আবার নতুন করে প্রতিটি গাছে প্রচুর পেয়ারা ধরতে শুরু করেছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এসব নতুন পেয়ারা বিক্রি করবেন বাগান মালিক মেহেদী হাসান।

বর্তমান তার বাগানে কাজ করছেন ১০ জন শ্রমিক। তারা সারাবছর পরিচার্যা করে থাকেন। গাছের পেয়ারা পলিথিন ব্যাগ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। এতে পোকার আক্রমণ থেকে রেহাই পাবে। পেয়ারা বাগানে দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর পর পানি সেচ ও স্প্রে দিতে হয়। 

বাগান শ্রমিক মিলন হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, আমরা প্রায় ১০ জন এই বাগান পরিচর্যার কাজ করি। বর্তমানে পলিথিন দিয়ে পেয়ারাগুলো ঢেকে দিচ্ছি। আবার মাঝেমধ্যে পানি ও স্প্রে দিয়ে আসছি।

খোকন নামে আরেকজন শ্রমিক বলেন, এই বাগানে আমি সারাদিন কাজ করি। কাজ শেষে যে টাকা পাই, তা দিয়ে আমার বাবা-মা ও ভাই-বোনদের নিয়ে চলি।

বাগান মালিক মেহেদী হাসান বলেন, অনেক আশা করে নিজেকে স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্য এই পেয়ারা বাগানটি করেছি। আজ আশা পূরণ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ২২০টি করে পেয়ারার চারা লাগিয়েছিলাম। ১০ বিঘার বাগানে এবার প্রায় ১০ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। নিজেকে আজ অনেক স্বাবলম্বী মনে হচ্ছে।

এবিষয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি অফিসার এখলাস হোসেন সরকার বলেন, চলতি বছরে এই উপজেলায় পেয়ারা চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। আম লিচুর ভালো ফলন হয়ে থাকে এখানে। এবার পেয়ারার চাষেও মানুষ ঝুঁকে পড়েছেন। উপজেলার রাণীগঞ্জের মেহেদী হাসান একটি বড় পেয়ারার বাগান করেছেন। তার বাগান প্রতিনিয়ত আমরা পরিদর্শন করে আসছি। তিনি একটি পেয়ারার চালান তুলেছেন, তাতে ভালো লাভবান হয়েছেন। উপজেলায় আরও অনেকেই পেয়ারা চাষে উৎসাহী হয়ে উঠছে। ৫ হেক্টর জমিতে উপজেলায় পেয়ারার চাষ হচ্ছে। আমরা সব পেয়ারা চাষিকে সুপরামর্শসহ সেবা দিয়ে আসছি।