শিল্পীর তুলির আঁচড়, রঙে বেরিয়ে আসে অনেক সত্য-সুন্দর গল্প। সেসব গল্পময় ছবি নিয়ে আয়োজিত হচ্ছে শাহনাজ সুলতানা ডলির চিত্রকর্ম ‘কালান্তর’।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় রাজধানীর ধানমণ্ডির সফিউদ্দিন শিল্পালয়ে প্রদর্শনীর উদ্বোধন হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু এবং সাইফুল ইসলাম। প্রদর্শনী খোলা প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। চলবে ১৬ থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত।
শাহনাজ সুলতানা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেছেন। চিত্রকর্মের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও স্ব ইচ্ছায় নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। আঁকা আঁকিতে তার রক্তেই রয়েছে রঙ তুলির বীজ। সেখান থেকে চারাগাছ হয়ে মহীরুহ।
মনের অজান্তেই শাহনাজ আকৃষ্ট হয়েছেন নৈসর্গিক রূপে। ছোটবেলার পাহাড়ের পাদদেশে, মেঘমালা, ফুল, আকাশ,পাখির গান আর প্রকৃতির নিত্য নতুন দিনের পরিবর্তন তার মন ছুঁয়ে যায়। সেই অনুভূতিকে হাতের রেখায় পেন্সিল ও রঙে ছাপ দিতেন কাগজে। শুরু হয় তার ছবি আঁকার কাল।
পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই শুরু হয় তার নতুন জীবন। জীবন সাথী হন আইনজীবী নজরুল ইসলাম খান। সংসারে নতুন অতিথি কন্যা সন্তান। শুরু হয় নতুন জীবন। কিন্তু কোথায় যেন কি একটা অসম্পূর্ণ বাঁধা জীবন। হাঁপিয়ে ওঠেন। ভালো লাগা, ভালোবাসা সবকিছু যেন এক কুয়াশাজালে আবৃত। শুরু হল ঐ কুয়াশাজাল ছেঁড়ার প্রচেষ্টা।
একসময় প্রবাসে পাড়ি দেন। প্রথমে মালয়েশিয়া, পরে অস্ট্রেলিয়া। আজন্ম নেশা ছবি আঁকার গল্প রচনাও সঙ্গী হলো। নীরবে নিভৃতে নিজ ভুবনে আঁকতে থাকেন শাহনাজ। খুঁজে পান জীবন সুন্দরের নতুন স্বাদ।
শিল্পীর কান্না, হাসি, ভালোবাসা, তিক্ততা আর অজানা কাহিনী নিয়েই শাহনাজের এবারের একক শিল্প প্রদর্শনী ‘কালান্তর’।
শাহনাজের শিল্প নির্মাণ, রঙ বিন্যাস, রঙ ও রেখার ছন্দে অবচেতনে গল্প, কোথায় যেন মনের গহীনে বনে অশনিসংকেতের তীব্র বেদনা! চিত্রগুলো জানান দেয় তাদের কষ্ট, ভালোবাসা আর অসহনীয় গল্পকথা।
শিল্পী শাহনাজ সুলতানার চিত্রকর্মের উপজীব্যি বিষয় হলো সমাজে পুরুষ শাসনে মেয়েদের অবস্থান, ভালো লাগা, মান-অভিমান, সমাজের অনিয়ম, প্রকৃতি, পরিবেশ ইত্যাদি। ‘কালান্তর’ প্রদর্শনীর প্রতিটি ছবির সাথে থাকবে এসবের বর্ণনা।
সংশ্লিষ্টরা প্রত্যাশা করেন, এ প্রদর্শনী দেশে নতুন ধারা তৈরি করবে। এছাড়া শাহনাজের চিত্র নির্মাণ দেশের গণ্ডি পেড়িয়ে দেশের বাইরেও একসময় প্রদর্শিত হবে।