রাজনীতি

বিদেশে লবিস্ট নিয়োগকারী বিএন‌পির রাজনী‌তি করার অধিকার আছে, প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ব‌লে‌ছেন, বিএনপি অবৈধ অর্থ ব্যয় করে দেশের বিরুদ্ধে বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে। দে‌শের বিরুদ্ধে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগকারী বিএন‌পির এই দে‌শে রাজনী‌তি করার অধিকার আছে কিনা প্রশ্ন রাখ‌তে চাই।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট বিশেষ করে বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত- এই কথাটা আমরা বহুদিন ধরে বলে আসছি। তারপরও হয়তো অনেকের মনে নানা প্রশ্ন ছিলো। প্রকৃতপক্ষে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি রুখে দেয়ার জন্য, দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য বিএনপি রীতিমতো অর্থ ব্যয় করে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন জায়গায় দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৫ সালে বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে লবিস্ট ফার্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তথ্য দাখিল করে। সেখানে বিএনপি এই ফার্মের সাথে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হয় যেটি শাহরিয়ার আলম গতকাল পার্লামেন্টে জানিয়েছেন। বিএনপি তাদের নয়া পল্টনের অফিসের ঠিকানা দিয়ে এই ফার্মের সাথে চুক্তিটা করেছে। এই ফার্মকে তারা প্রতি মাসে পঞ্চাশ হাজার ডলার করে এবং শুরুতে দেড় লাখ ডলার অ্যাডভান্স দিয়েছে। অর্থাৎ প্রায় দুই মিলিয়ন ডলার তারা তিন বছরে ‘পে’ করেছে। নয়া পল্টনের অফিসের ঠিকানা দিয়ে করা চুক্তি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নাই। শুধু তাই নয় বিভিন্ন ঠিকানা দিয়ে বিভিন্ন নামে তারা ১২টিরও বেশি লবিস্ট ফার্মের সাথে চুক্তি করেছে এবং মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার তারা এই ক্ষেত্রে ব্যয় করেছে। অর্থাৎ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য দেশবিরোধী অপপ্রচার চালানোর জন্য, দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি রুখে দেয়ার জন্য, দেশে রপ্তানি বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার জন্য বিএনপি প্রতিষ্ঠান হিসেবে লবিস্ট নিয়োগ করে এই কাজগুলো করছে।’ 

‘আপনারা জানেন যে, ওয়াশিংটন টাইমসে বেগম খালেদা জিয়ার নিজের নামে নিবন্ধ লিখেছিলো কয়েক বছর আগে। সেই নিবন্ধে তিনি বাংলাদেশের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে যাতে আমদানি বন্ধ করে সেজন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী কীভাবে দেশের বিরুদ্ধে বিদেশি একটি পত্রিকায় নিবন্ধ লিখে বলে যে বাংলাদেশ থেকে যাতে যুক্তরাষ্ট্র আমদানি না করে’, ব‌লেন ড. হাছান।

মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি দেশে তাদের অফিসের ঠিকানা দিয়ে চুক্তি করে বিদেশি লবিস্ট ফার্মকে লাখ লাখ ডলার ‘পে’ করছে, নির্বাচন কমিশনে তারা যে ব্যয়ের হিসাব দিয়েছে, সেখানে তো এই হিসাব দেয়নি। নির্বাচন কমিশনের উচিত তাদেরকে তলব করা। দ্বিতীয়ত: এই লাখ লাখ ডলার তারা কোথা থেকে পায়, কোথা থেকে আসে, সেটিও তো তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আমি মনে করি এখানে দুদকেরও ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। পাশাপাশি আয়কর বিভাগ থেকেও এ বিষয়ে তদন্ত ও তাদের তলব করা প্রয়োজন। অর্থাৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং সেটার দালিলিক প্রমাণ আমাদের হাতে আছে। যে রাজনৈতিক দল দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সে দলের কি দেশে রাজনীতি করার অধিকার আছে?’ 

বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য ‘সরকারের সিংহাসন টলোমলো’র জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘সিংহাসন মধ্যযুগীয় শব্দ। বেগম খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন হয়তো তারা সিংহাসন মনে করতেন। সরকার কিন্তু দেশ পরিচালনা করছে জনগণের রায়ে, সিংহাসনে নেই। আর সরকারের অবস্থান টলোমলো- এটি আমরা ১২ বছর ধরে শুনে আসছি। তাদের কর্মীরা যে হতাশ হয়ে গেছে সেটা থেকে মুক্ত রাখার জন্য রিজভী সাহেবদের এই কথাগুলো বলতে হয়।’