অর্থনীতি

আইসিবি’র কৌশলগত-লেনদেনের শেয়ারের তথ্য চায় বিএসইসি

শেয়ারবাজারে আর্থিক খাতে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে এবং লেনদেনের জন্য রক্ষিত শেয়ার বা সিকিউরিটিজের তথ্য জানতে চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সম্প্রতি আইসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি। এ চিঠি জারির সাত কার্যদিবসের মধ্যে আইসিবিকে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিএসইসিতে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আইসিবি তার নিজস্ব পোর্টফোলিওর অধীনে, মিউচুয়াল ফান্ড বা ইউনিট ফান্ড এবং অন্যান্য সহযোগী কোম্পানির মাধ্যমে বিভিন্ন শেয়ার বা সিকিউরিটিজ ধারণ করে আছে। সেই শেয়ার ধারণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিটি কিছু তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে কৌশলগত পরিচালক পদের দায়িত্বে রয়েছে। এর ফলে আইসিবি এবং তার মনোনীত পরিচালকরা সেইসব কোম্পানির সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী অংশ হিসেবে রয়েছে, এতে তারা সেই কোম্পানিগুলোর মূল্য সংবেদনশীল তথ্যের (পিএসআই) একজন রক্ষক। সেক্ষেত্রে ঘোষণা ছাড়াই সেই কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রি বা হস্তান্তরের মাধ্যমে বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী উদ্যোক্তা এবং পরিচালকের দ্বারা ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের আইন লঙ্ঘন হতে পারে। তাই আইসিবিকে তাদের নিজস্ব ও তাদের সহযোগী কোম্পানির পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার বা সিকিউরিটিজের তথ্য কমিশনে জমা দিতে বলা হলো।

এদিকে চিঠিতে আইসিবিকে দুটি পদ্ধতিতে তথ্য জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো- লেনদেন করার ক্ষেত্রে শেয়ার বা সিকিউরিটিজ আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৯৪ এর ধারা ৫৩(এম) এর অধীনে উৎস কর নিশ্চিত করার মাধ্যমে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই লেনদেন (বিক্রয় বা ক্রয়) করা যেতে পারে।

অপরটি হলো- বেশকিছু কোম্পানিতে আইসিবি’র শেয়ার বা সিকিউরিটিজ কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে রয়েছে। সেক্ষেত্রে কোনও ঘোষণা ছাড়া‌ সেই কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রি বা ক্রয়ের অনুমতি পাবে না আইসিবি‌ বা তার সহযোগী কোম্পানি। কারণ আইসিবি সেই কোম্পানিগুলোর সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীর অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে।

এ বিষয়ে জানতে আইসিবি'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেনি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসি’র একজন কর্মকর্তা জানান, আইসিবিকে তাদের নিজস্ব ও তাদের সহযোগী কোম্পানির পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার বা সিকিউরিটিজের তথ্য চেয়েছে কমিশন। কারণ কমিশন জানতে চায়, কোম্পানিগুলোর মূল্য সংবেদনশীল তথ্যের রক্ষক হিসেবে থাকা আইসিবি কোনো আইন লঙ্ঘন করছে কি-না। এছাড়া কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে আইসিবি সেই কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রি বা হস্তান্তরের মাধ্যমে বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের আইন লঙ্ঘন করছে কি-না তা যাচাই করে দেখবে বিএসইসি।

প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি আইসিবি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৭৭ সালে। ‘এ’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির ৮০৫ কোটি ৮১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৮০ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৫২৭টি। এর মধ্যে সর্বশেষ সময়ে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের হাতে ৬৯.৮১ শতাংশ, সরকারের হাতে ২৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১.৭০ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ১.৪৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। রোববার (২৩ জানুয়ারি) আইসিবি’র শেয়ার সর্বশেষ ১২৭.৩০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।