খেলাধুলা

কপিলদের সংবর্ধনা দেওয়ার পয়সা ছিল না, বিসিসিআইর পাশে দাঁড়ান লতা

উপমহাদেশের কোকিলকণ্ঠী লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠে আর চাইলেও কোনোদিন গান শোনা যাবে না। ভারতের নাইটিঙ্গেলখ্যাত এই সঙ্গীত শিল্পী রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) না ফেরার দেশে চলে গেছেন। সাত দশকেরও বেশি লম্বা সঙ্গীত জীবনে ৩০ হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন। কিন্তু সঙ্গীতেরও বাইরে যে তার বিচরণ ছিল, তা খুব বেশি মানুষের জানা নেই। এই যেমন, ক্রিকেটের পাড় ভক্ত ছিলেন কিংবদন্তি গায়িকা। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (বিসিসিআই) দুর্দিনে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের পাশে।

বর্তমান সময়ের অন্যতম ধনী আর পরাশক্তি ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। অদ্ভুত শোনালেও সত্যি যে, ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে কপিল দেবের নেতৃত্বে ভারত প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সময় দুর্দশায় দিন কাটছিল তাদের। আর্থিক সংকট এতটাই প্রকট ছিল যে, বিশ্বকাপ জয়ী দলকে সংবর্ধনা দেওয়ার মতো পয়সাও ছিল না ভারতীয় বোর্ডের। ওই সময় সহায়তার হাত বাড়ান লতা।

না, নিজে আর্থিকভাবে সহায়তা করেননি লতা। তবে নিজের প্রতিভাকে ব্যবহার করেছিলেন। ১৯৮৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ফাইনালে হারিয়ে প্রথম কোনো বৈশ্বিক ট্রফি জিতেছিল ভারত। তাদের সংবর্ধনা কিংবা সম্মানিত করার মতো যথেষ্ট অর্থ ছিল না বোর্ডের তহবিলে। ক্রিকেটের প্রশাসক রাজ সিং দুঙ্গারপুর তখন লতার শরণাপন্ন হন।

দুঙ্গারপুরের আত্মজীবনীতে তৎকালীন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট ও সাবেক মন্ত্রী এন. কে. পি. সালভে বলেছিলেন, ‘ওই সময় বিসিসিআইর ফান্ডে যথেষ্ট টাকা পয়সা ছিল না। এই উদ্দেশ্যে টাকা সংগ্রহের জন্য দিল্লিতে লতা মঙ্গেশকরকে একটি সঙ্গীত অনুষ্ঠান করতে অনুরোধ করার প্রস্তাব দেন রাজ সিং।’

একটি রেডিও স্টেশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লতা সেই দিনটির কথা স্মরণ করেছিলেন, ‘আমি বলেছিলাম, অবশ্যই করব। ১৭ আগস্ট দিল্লিতে গেলাম এবং একটি বিশেষ শো করেছিলাম। সুরেশ ওয়াড়েকার ও মুকেশ ভাইয়ার ছেলে নিতিন মুকেশ এই শোয়ে সমর্থন দেন। সেখানে রাজিব গান্ধীও উপস্থিত ছিলেন।’

ওই কনসার্টের বিশেষ গানটির গীতিকর ছিলেন লতার ভাই পন্ডিত হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর। ভারত বিশ্ব বিজেতা- গানটিতে সেদিন কণ্ঠ মেলান ক্রিকেটাররাও।

কনসার্টটি থেকে তহবিলে যে পরিমাণ অর্থ যুক্ত হয়েছিল, তা ঈর্ষণীয়। ২০ লাখ রুপি সংগ্রহ করা হয়েছিল, প্রতি খেলোয়াড় পেয়েছিলেন এক লাখ রুপি করে। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, ওই পারফরম্যান্স করার জন্য একটি পয়সাও নেননি লতা।