ফাগুনের মলাট

বইমেলায় জাকির হোসেনের ‘গণমাধ্যমে বিদ্রোহী মার্চ’

একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে জাকির হোসেনের ‘গণমাধ্যমে বিদ্রোহী মার্চ’। একাত্তরের অগ্নিঝড়া মার্চের ঘটনাসমূহের বর্ণনা নিয়ে এই বই। 

মূলত পহেলা মার্চ থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের উপর পশ্চিমা সামরিক জান্তার নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়ে। সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব চলে যায় বঙ্গবন্ধুর হাতে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেই একাত্ম হয়েছিল ৭ কোটি বাঙালি। একাত্তরে ২ মার্চ সকাল বেলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রলীগ আয়োজিত বিশাল সমাবেশে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) তৎকালীন সহসভাপতি (ভিপি) আসম আব্দুর রব। পরদিন পল্টন ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজাহান সিরাজ। 

একাত্তরের প্রধান সংবাদপত্রগুলো এই দুটি সমাবেশের প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও এসব প্রতিবেদনে পতাকা উত্তোলন এবং স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণার বিষয়টির উল্লেখ নেই। এই দুটি বিষয় গণমাধ্যমে প্রথম গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ হয় ১৯৭২ সালের অক্টোবর মাসে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠনের পর। জাসদের মুখপত্র গণকণ্ঠ ১৯৭৩ সালের ২ ও ৩ মার্চ এই দুটি ঘটনা প্রথম পৃষ্ঠায় গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করে। একাত্তরের গণমাধ্যমে মূল দৃষ্টি ছিল সাড়ে সাত কোটি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর। তিনি যা বলতেন এবং যেসব নির্দেশনা দিতেন তা প্রধান খবর হিসেবে প্রকাশ হতো। এ বইটি এরই প্রামাণ্য দলিল। 

জাকির হোসেন পেশায় সাংবাদিক, অঙ্গীকারে লেখক। দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম, নিবন্ধ ও প্রবন্ধ লিখছেন। রাজনীতি তাঁর প্রিয় বিষয়। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়েও নিয়মিত লিখছেন। সত্তর দশকের অস্থির সময়ের রাজনীতি বিষয়ে অনুসন্ধানী ও গবেষণাধর্মী প্রতিবেদনের মাধ্যমে তিনি পাঠকপ্রিয় হন। গবেষণা করছেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড এবং বাংলাদেশে সামরিক জান্তাদের উত্থান পতন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি নিয়ে। 

ইতিপূর্বে প্রকাশিত তার বইয়ের মধ্যে রয়েছে, একুশের কবিতা সংকলন, আতাউস সামাদ: জীবনে ও পেশায় এবং মানুষের মানচিত্র, ষড়যন্ত্রের জালে বিপন্ন রাজনীতি। গণমাধ্যমে বিদ্রোহী মার্চ বইটি প্রকাশ করেছে আলোকায়ন। প্রচ্ছদ একেঁছেন মুকুল রেজা। মূল্য ৫০০টাকা।