আইন ও অপরাধ

দুদকের মামলায় জামিন হয়নি সম্রাটের, মুক্তি মিলছে না

দুদকের দায়ের করা অবৈধ সম্পদের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালত শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নাকচ করেন।

এদিন সম্রাটের পক্ষে জামিন শুনানি করেন এহেসানুল হক সমাজী। দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধিতা করেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। এ মামলায় জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় কারামুক্ত হতে পারছেন না সম্রাট।

জানা যায়, সম্রাটের বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়। তিন মামলায় ইতোমধ্যে তিনি জামিন পেয়েছেন। দুদকের মামলায় কারাগারে ছিলেন তিনি। জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় কারামুক্তিতে বাধা রইলো তার।

সম্রাটের আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত চারটি মামলা হয়েছে। রোববার রমনা থানার অস্ত্র এবং অর্থপাচার মামলায় জামিন পান তিনি। সোমবার একই থানার মাদক মামলায়ও সম্রাট জামিন পেয়েছেন। আজ দুদকের মামলায় জামিন আবেদন করা হয়। আদালত তা নামঞ্জুর করেছেন। ফলে তিনি কারামুক্ত হতে পারছেন না। তবে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে তাকে শিগগিরই আমরা কারামুক্ত করবো।’

এদিকে, এদিন মামলাটি চার্জশুনানির জন্য ধার্য ছিল। আসামিপক্ষ চার্জশুনানি পেছানোর আবেদন করে। আদালত তা মঞ্জুর করে আগামী ১১ মে চার্জশুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।

২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে, তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।

মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

গত ২২ মার্চ দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ ধার্য করে মামলাটি বিশেষ জজ আদালত-৬ এ পাঠানো হয়। আগামীকাল বুধবার মামলাটি চার্জশুনানির জন্য ধার্য রয়েছে।

উল্লেখ্য, ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে তাকে বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।