দেহঘড়ি

ঈদ আনন্দ মাটি করতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য, যা করণীয়

ঈদ মানে হলো আনন্দ, খুশির দিন। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদের দিনটি সকলেরই বহুল প্রতীক্ষিত। আর আনন্দের এই দিনে অসুস্থতায় কাবু হতে নিশ্চয় কেউ চান না। 

কিন্তু রমজান মাসে হয়তো অনেকেরই পানি কম খাওয়া হয়েছে, সবজি কম খাওয়া হয়েছে, ভাজা পোড়া বেশি খাওয়া হয়েছে। ফলে ঈদে মাংস, তেল, চর্বি বেশি খাওয়া হলে শরীরে পানির অভাব আরো বেশি দেখা দিতে পারে। যার ফলস্বরূপ ঈদের দিনে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যায় ভুগতে পারেন।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে ঈদের দিন দুপুর ও রাতে খাবারের তালিকায় সবজির একটি পদ রাখা যেতে পারে। ঈদের সময়টায় সব খাবারের ফাঁকে ফাঁকে পর্যাপ্ত পানের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। ঈদের দিন অনেক বেশি খাবার খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিক, পেট ফাঁপা বা বদ হজমও হতে পারে। তাই, খাবার সময় অবশ্যই পরিমিতি বোধ বজায় রাখতে হবে। একবারে বেশি পরিমাণ খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে কয়েকবারে খাওয়া ভালো। কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে কিছু ঘরোয়া উপায় ফলো করে দেখতে পারেন।

* লেবু পানি: লেবুর রসের সাইট্রিক অ্যাসিড পরিপাকতন্ত্রে উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে ও শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করে। লেবু চিপে রস বের করে এক গ্লাস পানির সঙ্গে পান করুন অথবা লেবু চা পান করতে পারেন।

* পুদিনা বা আদার চা: পুদিনায় মেনথল থাকে, যার রয়েছে অ্যান্টিস্প্যাজমোডিক ইফেক্ট যা পরিপাক নালীর মাংসপেশীকে শিথিল করে। আদা একটি উষ্ণ হার্ব যা শরীরের ভেতরে অধিক তাপ উৎপাদন করে, হার্বালিস্টদের মতে এটি ধীর হজমকে দ্রুত করতে পারে। পুদিনা বা আদার চা খাবার হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

* আলুবোখারার জুস: আলুবোখারা মৃদু ল্যাক্সাটিভ হিসেবে কাজ করে। এটি বৃহদান্ত্রের মধ্য দিয়ে বর্জ্য নামাতে মাংসপেশিকে উদ্দীপ্ত করে। আলুবোখারার জুস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বেশ কার্যকর।

* পাকা কলা: পাকা কলা কোষ্ঠকাঠিন্য সহজে দূর করতে পারে। কারণ কলায় প্রচুর আঁশ থাকে যা এই সমস্যা সহজে দূর করতে পারে। কলার আঁশ শরীরের বৃহৎ অন্ত্র থেকে পানি শোষণ করে। এতে মল নরম হয়।

* ক্যাস্টর অয়েল: এই ঘরোয়া চিকিৎসাটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম চলে আসছে। খালি পেটে এক থেকে দুই চা-চামচ ক্যাস্টর অয়েল গ্রহণ করুন এবং আট ঘণ্টার মধ্যে ফল পাবেন। 

* কফি: কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে কফি পান করে দেখতে পারেন। এতে ভালো কাজ হয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এর অন্যতম কারণ হলো গরম পানীয় বর্জ্যের চলাচলে গতি আনে।

* ইসবগুলের ভুসি: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর না হলে পানিতে ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খেতে পারেন। প্রাকৃতিক উপাদান বলে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা কম।

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার কোনো ওষুধ সেবন করবেন না। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা প্রকট হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।