জাতীয়

সরকারিভাবে কাঁচা চামড়া কেনা যেতে পারে: শিল্পমন্ত্রী

কাঁচা চামড়ার সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকল্পে স্থায়ী কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

বুধবার (০৮ জুন) বিকেলে চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণের লক্ষ্যে গঠিত টাস্ক ফোর্সের ৫ম সভায় সভাপতির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘চামড়া শিল্প নিয়ে নতুনভাবে চিন্তাভাবনা করতে হবে। শুধু ঈদ কেন্দ্রিক কার্যক্রম দিয়ে এরকম একটি বৃহৎ এবং সম্ভাবনাময় শিল্পটির পরিপূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়।’

টাস্ক ফোর্সের আহ্বায়ক ও শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরের কর্মকর্তারা, লেদারগুডস এন্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টারস্ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা সভায় অংশ নেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘চামড়ার বাজার তৈরি হয়েই আছে। বাইরে থেকে গবাদীপশু কিনতে হচ্ছে না। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সহজেই খাতটিকে লাভজনক করার সুযোগ আছে। সেই সঙ্গে এর মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। ঈদ মৌসুমে চামড়া সরবরাহ বেশি হওয়ায় অনেক সময় ন্যায্য দাম পাওয়া যায় না। এজন্য প্রয়োজনে সরকারিভাবে চামড়া কেনার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। স্থানীয়ভাবে চামড়া কিনে লবণ দিয়ে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করলে প্রান্তিক পর্যায়ে চামড়ার ভালো দাম পাওয়া যাবে।’

সভায় চামড়া শিল্পের বিকাশকে সুসংহত এবং সাবির্ক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ ও টেকসইকরণে ‘চামড়া শিল্প ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ গঠন’, দেশের বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে অস্থায়ী চামড়া সংরক্ষণাগার স্থাপন, প্রয়োজনীয় লবণ প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে লবণ ডিলার নিয়োগ, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে চামড়া ক্রয়-বিক্রয় নিশ্চিত করতে সব স্টেক হোল্ডারদের সমন্বয়ে একটি ‘কেন্দ্রিয় মনিটরিং সেল’ গঠন, সঠিকভাবে কোরবানীর চামড়া ছাড়ানো, সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার বিষয়সমূহ, বিজ্ঞাপন/টিভিসি আকারে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ‘চামড়া শিল্প উন্নয়নে এবং রপ্তানি বৃদ্ধিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্ভাব্য সবরকম সহযোগিতা করে যাচ্ছে। আসন্ন ঈদ উল আযহা-২০২২ সামনে রেখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ‘সাভার ট্যানারি শিল্প এলাকার কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্যানারি শিল্পের বর্জ্যের যথাযথ নিষ্কাশন ও কমপ্লায়েন্স অর্জন সাপেক্ষে ট্যানারি মালিকদের পরিবেশ অধিদপ্তর হতে ছাড়পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ট্যানারিগুলোর আধুনিকায়ন করতে হবে। কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণে লবণের চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে এবং কোরবানির পশুর বর্জ্য যথাযথভাবে অপসারণ করত হবে।

শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, আসন্ন ঈদ উল আযহা উপলক্ষে কোরবানির চামড়া সংগ্রহ, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, প্রক্রিয়াজাতকরণের বিষয়সমূহ পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। এছাড়া আসন্ন ঈদ উল আযহা ও তৎপরিবর্তী সময়ে সাভার ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি, বিদ্যুৎ ও নিরাপত্তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।