দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম প্রবেশদ্বারখ্যাত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে আবারো তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে তীব্র স্রোত ও ফেরি সংকটের কারণে উভয় ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি রয়েছে।
এতে পচনশীল পণ্যবোঝাই ট্রাকচালক এবং যাত্রীবাহী বাসচালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়া হঠাৎ ফেরি ভাড়া বৃদ্ধি করায় চালক ও পরিবহন মালিকদের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ।
সোমবার (২০ জুন) সকাল থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে গেলে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের প্রায় সাড়ে ৫ কি.মি. এলাকা জুড়ে পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী পরিবহনের সারি রয়েছে। এছাড়াও গোয়ালন্দ মোড়ে ঢাকা-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশ জুড়েও যানজট রয়েছে।
একাধিক চালক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় এক মাস যাবৎ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৮/২০ টি ছোট বড় ফেরি চলাচল করলেও হঠাৎ পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোত এবং ৪টি রোরো (বড়) ফেরি বিকল হওয়ার কারণে দৌলতদিয়ায় যানজট বেড়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা অফিস সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১২টি রোরো (বড়), ৬টি ইউটিলিটি (ছোট), ২টি ডাম্ব এবং ১টি কে-টাইপ সহ মোট ২১টি ফেরি চলাচল করে। তবে রোরো বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ও রোরো ডা. গোলাম মওলা এই দুইটি ফেরি আরিচা ও কাজিরহাট নৌরুটে চলে গেছে। রোরো ফেরি শাহ্ মখদুম এবং ১টি ইউটিলিটি ফেরি মাধবীলতা বিকল থাকায় পাটুরিয়া ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামত করা হচ্ছে। যে কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরির সংখ্যা কমে গেছে।
শ্যামলী পরিবহনের এক বয়স্ক নারী যাত্রী বলেন, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে যানজটের কারণে প্রায় ৫ ঘণ্টা যাবৎ অপেক্ষায় আছি। যেতে পারছি না। দীর্ঘ সময় গাড়ীর মধ্যে থেকে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে।
এসময় সাকুরা পরবহনের আরেক যাত্রী বলেন, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফেরিতে উঠতে পারছি না। আরোও কত সময় লাগবে সঠিক সময় কেউ বলতে পারছে না। গরমের মধ্যে আমার মত অনেকে অসহায়ের মত অপেক্ষায় আছে।
পন্যবাহী ট্রাক চালক মাসুদ শেখ জানান, গত এক মাস যাবৎ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া কোন ঘাটে দুর্ভোগ হয়নি। ঘাটে এসেই ফেরিতে উঠতে পেরেছি। হঠাৎ এই নৌরুটের ফেরির সংকট হওয়ার কারণে যানজটে থাকতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ঘাট সংশ্লিষ্টরা ইচ্ছা করলে ঘাট ফাঁকা রাখতে পারে। কিন্ত ঘাটের এই কৃত্রিম যানজট বছরের পর বছর চলে আসছে।
আরেক ট্রাকচালক সেলিম জানান, তিনি এসেছেন ফরিদপুর থেকে। গতকাল বিকাল থেকে ঘাট এলাকায়। এখনো ফেরিতে উঠতে পারি নাই।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের উপপরিচালক শাহ খালেদ নেওয়াজ জানান, পদ্মা নদীতে স্রোত থাকার কারণে ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৫০টি ট্রিপ কমে গেছে। এদিকে ২টি ফেরি আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট এবং ২টি ফেরি পাটুরিয়া ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামত করা হচ্ছে। যে কারণে কিছু যানবাহন উভয় ঘাটে পারের অপেক্ষায় রয়েছে।