আইন ও অপরাধ

ভয়ে পালিয়ে যান ঘাতক জিতুর বাবা

সাভারে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যাকাণ্ডের পর মূল আসামি ঘাতক আশরাফুল ইসলাম জিতুর বাবা মো. উজ্জ্বল ভয়ে পালিয়ে যান বলে আদালতকে জানিয়েছেন।

বুধবার (২৯ জুন) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই এমদাদুল হক আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। 

আবেদনে বলা হয়, এজাহারনামীয় ১ নং আসামি জিতুর পিতা। এ আসামি মামলার ঘটনার ইন্ধনদাতা এবং জিতুকে আত্মগোপন করেছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এমতাবস্থায় হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনসহ পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করতে রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবু রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষক উৎপল কুমার কলেজের নীতি-নৈতিকতার বিষয়ে শিক্ষা দিতেন। সেই বিষয়ে শিক্ষা দিতে গিয়েই শিক্ষার্থীর হাতে খুন হলেন তিনি। জিতু মেয়েদের ইভটিজিং করতো। উৎপল কুমার বারণ করায় তার মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই ফলশ্রুতিতে খুন করা হয় উৎপল সরকারকে।’

আসামির পক্ষে কোনও আইনজীবী ছিলেন না। এসময় বিচারক আসামির কাছে জানতে চান, তার কিছু বলার আছে কিনা।

তখন আদালতের উদ্দেশ্যে উজ্জ্বল বলেন, দুর্ঘটনার পর থেকে সে (জিতু) কোথায় আছে আমি জানি না।’ আপনি পালিয়ে গেলেন কেন? এমন প্রশ্নে উজ্জ্বল বলেন, ভয়ে আমি পালিয়ে যায়। এরপর বিচারক বলেন, সে যে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বাড়িতে গিয়ে একথা আপনাকে জানায়নি? বাবা হিসেবে আপনার জানা উচিত ছিল না? তখন উজ্জ্বল বলেন, ‘ঘটনার পর ওকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কোথায় আছে বলতে পারবো না।

এরপর আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানা এলাকা থেকে উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে ওই শিক্ষকের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র জিতু। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার মারা যান। রোববার আশুলিয়া থানায় নিহত শিক্ষকের ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে জিতুসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে এখনও অভিযুক্ত শিক্ষার্থী পলাতক রয়েছে।