প্রবাস

পদ্মা সেতু: উত্তর-দক্ষিণের মেলবন্ধন

স্বাধীনতার ৫১ বছরে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অন্যতম সেরা অর্জন। এতদিন প্রমত্তা পদ্মা বাংলাদেশের উত্তর এবং দক্ষিণাঞ্চল বিভাজন করে রেখেছিল।

যোগাযোগের অসুবিধার কারণে দক্ষিণের ২১ জেলা অর্থনৈতিক, সামাজিক ও বাণিজ্যিক সুবিধা বঞ্চিত ছিল। দুটি সমুদ্রবন্দর (পায়রা ও মংলা) এবং দুটি স্থলবন্দর (ভোমরা ও বেনাপোল) থাকা স্বত্বেও প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সুবিধা সীমিত ছিল।

এছাড়া সুন্দরবন ও কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা ছিল কম। এসব অঞ্চলের ফল, সবজি ও মাছ ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পৌঁছানো কঠিন ছিল। তবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে একসঙ্গে সব সমস্যার সমাধান হয়েছে।

সেতুটি নিজস্ব অর্থায়নে সম্পাদন করার জন্য সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আধুনিক কারিগরি দক্ষতা এবং স্থাপত্যের অনুপম প্রদর্শনী পদ্মা সেতু নানা বৈশিষ্ট্যে অনন্য।

দ্বিতল বহুমুখী সেতুটির উপরে রয়েছে সড়কপথ, নিচে রেল লাইন। সঙ্গে রয়েছে গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন, ফাইবার অপটিকস ক্যাবল। সেতুটি ভূমিকম্প সহনীয় করতে ১০০০০ টনের বেশ কিছু বেয়ারিং সংযোজন করা হয়েছে।

হিমালয়ে সৃষ্ট গঙ্গা ও যমুনার মিলিত জলরাশি পদ্মা নদী হয়ে সাগরে মিশে। তীব্র স্রোতের এই নদীকে বাগে আনাটাই ছিল বিশাল চ্যালেঞ্জ। নদীর তলদেশের কিছু পাইল ১২০ মিটার গভীরতায় স্থাপন করতে হয়েছে।

প্রাথমিক হিসেবে পদ্মা সেতু দেশের প্রবৃদ্ধিতে ১.৬% অবদান রাখবে। সেতু ঘিরে গড়ে উঠবে শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্র।

লেখক: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী জ্বালানি বিশেষজ্ঞ