শিক্ষা

খুবির যৌন নিপীড়নের ঘটনার তদন্ত চায় মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেছিলেন এক নারী সহকর্মী। ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনা হওয়ায় অভিযোগটি আমলে না নিয়েই সম্প্রতি প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি। এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছে মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক।

দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমবিষয়ক শিক্ষকদের প্ল্যাটফর্ম মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ দাবি জানায়।

অভিযোগের ১০ মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটি বলেছে, ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনা হওয়ায় যৌন হয়রানির অভিযোগটি তারা বিবেচনাই করেননি। আর শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

গত বছরের আগস্টে অভিযোগ ওঠার পর ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ৮ জুন বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভায় ওই শিক্ষকের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে এ বিষয়ে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।

বিবৃতিতে মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক বলেছে, যৌন হয়রানির ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটি যে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক হতবাক ও ক্ষুব্ধ। কমিটির প্রতিবেদন ও বক্তব্যে স্ববিরোধিতা রয়েছে।

এতে বলা হয়, কমিটি একদিকে বলেছে, ঘটনাস্থল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের বলে তাদের আওতাভুক্ত নয়। অন্যদিকে অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে অভিযুক্তকে রেহাই দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক বলছে, ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ঘটেছে বলে তদন্ত এড়ানোর সুযোগ নেই। দুজন শিক্ষকই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিজীবী। ঘটনাস্থল যেখানেই হোক না কেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটির তদন্ত করতে হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ভিকটিমের অভিযোগপত্র অনুযায়ী জানা যায়, ঘটনার পরও অভিযুক্ত বারবার ভিকটিমকে ফোন করে এবং খুদে বার্তা দিয়ে উত্ত্যক্ত করেন। এ–সংক্রান্ত প্রমাণাদিও নিরোধ কমিটিকে দেওয়া হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির নীতিমালার ৩ (গ) ধারা অনুযায়ী, কাউকে মোবাইল, ই–মেইল বা খুদে বার্তার মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করলে সেটি বিচারের আওতায় পড়ে। এ ধারা অনুযায়ীও ওই ঘটনাটি তদন্ত ও বিচারের আওতায় পড়ে।

অভিযোগকারী শিক্ষকের অভিযোগটি অবিলম্বে আমলে নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছে মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক। 

বিবৃতিতে বলা হয়, তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তকে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অভিযোগটি মিথ্যা হলে সেটিও তদন্ত করে খোলাসা করা হোক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, অধ্যাপক কাবেরী গায়েন, এই বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বার্ড কলেজের সেন্টার ফর এক্সপেরিমেন্টাল হিউম্যানিটিজের ভিজিটিং অধ্যাপক ফাহমিদুল হকসহ পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমবিষয়ক ৫১ জন শিক্ষক এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।