জাতীয়

‘যত্রতত্র পশুর হাট নয়’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, `রাস্তাঘাট অথবা যেখানে যান চলাচলে বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি হয়, সেখানে পশুর হাট বসতে পারবে না। যত্রতত্র হাট বসানো যাবে না। পশুর হাট নির্ধারিত জায়গায় বসবে।’

শুক্রবার (১ জুলাই) রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে `পদ্মা সেতুর সম্ভাবনা: দেশীয় পশুতে কোরবানি, খামারিদের সমস্যা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি স্বীকৃত হাটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি মেডিক্যাল ব্যবস্থাপনা থাকবে, যাতে অস্বাস্থ্যকর ও রোগগ্রস্ত পশু কেউ যেন হাটে নিয়ে না আসে অথবা সেটা বিক্রি যেন না হয়। হাটে বিনামূল্যে পশু পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া, এবারের হাটে আর্থিক লেনদেনের জন্য স্মার্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থা থাকবে। এভাবে ক্রেতা-বিক্রেতা ও ভোক্তার জন্য নিরাপদ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘এ বছর আমরা নিয়ম করে দিয়েছি, যিনি কোরবানির পশু নিয়ে আসবেন, তিনি পশু ঢাকায় না সিলেটে কোথায় বিক্রি করবেন, সেটা তার ব্যাপার। পথে কোনো বাজারে তাকে পশু নামাতে জোর করা যাবে না। খামারিদের আরেকটি সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে, বাড়িতে বা রাস্তায় পশু বিক্রি করলে তাদের কোনো হাসিল দিতে হবে না। কেউ খামারিদের বাজারে এনে পশু বিক্রিতে বাধ্য করতে পারবে না। কোরবানির পশু বাড়িতে বিক্রি করলে নিকটবর্তী বাজারের ইজারাদার চাঁদা আদায়ের কথা বলতে পারবে না।’

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এবার বৃহত্তর সিলেট ও ঢাকার একটি অংশে প্রাণিসম্পদ খাতে যে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে, সেটা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রণোদনা দিয়ে খামারিরা যাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে এবং এ খাত যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বৃহত্তর সিলেটে স্মরণাতীতকালের বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস হলেও পশু মৃত্যুর সংখ্যা বিশাল নয়। তারপরও ওই অঞ্চলের ক্ষতির বিষয়টি মাথায় রেখে বরিশালসহ দেশের অন্যান্য এলাকার উদ্বৃত্ত পশু এসব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিপণনের জন্য উৎপাদকদের নিয়ে যেতে হবে। পশু পরিবহনে পথে কোনো বাধা থাকবে না। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের কারণে দ্রুততার সাথে এক অঞ্চলের পশু অন্য অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া এখন সহজ। এক্ষেত্রে খামারিদের এগিয়ে আসতে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘পশুখাদ্য তৈরির অন্যতম উপাদান প্রোটিন বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এ আমদানিতে উৎসে করসহ অন্যান্য কর সরকার শিথিল করে দিয়েছে। দেশে পশুখাদ্য উৎপাদনের জন্য সরকার এ কর অব্যাহতি দিয়েছে। গুঁড়া দুধ উৎপাদনে দেশে খামারিরা কারখানা স্থাপন করলে বিদেশ থেকে যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য আমদানিতে কর মওকুফের ব্যবস্থা সরকার করবে।’

ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সমস্যা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে বলেও জানান মন্ত্রী। এ সমস্যা সমাধানের উপায় বের করতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়ার বিষয়েও আশ্বস্ত করেন তিনি।

ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি এম এ জলিল মুন্না রায়হানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ভেটেরিনারি হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিউল আহাদ ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম সুমন।