আন্তর্জাতিক

সব দলের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসবেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগতে থাকা শ্রীলঙ্কায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের বাস ভবনে ঢুকে বিক্ষোভ করছেন। এদিকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে সঙ্কটময় বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শ্রীলঙ্কার সবকটি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন। একই সঙ্গে তিনি স্পিকারের কাছে পার্লামেন্ট অধিবেশন ডাকার অনুরোধ করেছেন।

প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগের দাবিতে শনিবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে সারা দেশের হাজার হাজার মানুষ শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে জড়ো হন। এক পর্যায়ে তারা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে প্রবেশ করেন। প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সৈন্যরা গোতাবায়া রাজাপাকসেকে এসময় নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যান। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, হাজারো বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার বাসভবনে ঢুকে পড়েছেন। তারা বাড়ির ছাদে, বাগানে সব জায়গায় অবস্থান নিচ্ছেন। এমনকি তাদের ওই বাসভবনের রান্নাঘরে গিয়ে খাবার খেতে ও সুইমিংপুলের পানিতে সাতার কাটতে দেখা যায়। 

বিবিসির কাছে আসা একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের অনেকেই প্রেসিডেন্ট বাসভবনে থাকা সুইমিং পুলে নেমে গোসল করছেন।

বিবিসি সিংহলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কলম্বোর ন্যাশনাল হাসপাতালের মুখপাত্র জানান, বিভিন্ন স্থানে হওয়া সংঘর্ষে আহত ৩৩ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্য আছেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে সঙ্কটময় পরিস্থিতি নিয়ে  শ্রীলঙ্কার সবকটি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন। একই সঙ্গে তিনি স্পিকারের কাছে পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরুর অনুরোধ করেছেন।

জ্বালানি সঙ্কটের কারণে গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কা সরকার অপ্রয়োজনীয় যানবহনে পেট্রোল ও ডিজেল সরবরাহ না করতে নির্দেশ দেয়। বর্তমানে শ্রীলঙ্কা সরকার রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি আমদানির চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া রাষ্ট্র হিসেবে মন্তব্য করেন। মারাত্মক আর্থিক সংকেট পড়া শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক রিজার্ভ বলে আর কিছু নেই। তাই দেশটি খাবার, ওষুধ ও জ্বালানির মত অতি জরুরি আমদানি প্রয়োজন মেটাতে পারছে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। 

সূত্র: বিবিসি