বিশ্ব অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিরাজমান অবস্থায় সরকারি ব্যয় কমানোর নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে নতুন গাড়ি কেনা, জরুরি প্রকল্প ছাড়া অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ না করা, সরকারি কর্মকর্তাদের নানা ধরনের ভাতা কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ব্যয় কমানোর অংশ হিসেবে দপ্তরগুলোতে বিদ্যুৎ ব্যবহার কমিয়ে আনার পর এবার সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ির জ্বালানি খরচ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
কর্মকর্তাদের জন্য পেট্রোল, ওয়েল ও লুব্রিকেন্ট বাবদ বরাদ্দের ৮০ শতাংশের বেশি খরচ করা যাবে না। ফলে গাড়ির জ্বালানি ব্যবহার ২০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি হয়েছে। পরিপত্রে এ খাতে বেঁচে যাওয়া অর্থ অন্য কোনও খাতে ব্যয় করা যাবে না।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনু বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ আনিসুজ্জামানের স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়েছে, বর্তমানে বৈশ্বয়িক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্র সাধন এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে কতিপয় খাতে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয়ে সরকার কতিপয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পেট্রোল, ওয়েল ও লুব্রিকেন্ট’ এবং গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ করা অর্থের ২৫ শতাংশ সাশ্রয় করতে হবে। এসব খাতের বরাদ্দ করা অর্থ অন্য কোনও খাতে পুনঃউপযোজন করা যাবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে এ পরিপত্র অবিলম্বে কার্যকর হবে।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভার সদস্যসহ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার সচিবদের নিয়ে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস জানান, জ্বালানি খাতের বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহারের লক্ষে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় পরিপত্র জারি করবে।
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারও বেশ কিছু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। সূচি করে সারাদেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং চালু হয়েছে। রাত ৮টায় দোকান বন্ধ, আলোকসজ্জায় নিষেধাজ্ঞা, সপ্তাহে এক দিনের জন্য পেট্রল পাম্প বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সরকার ব্যয় সংকোচনের বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে সরকারের ব্যয়-সাশ্রয়ে ওই বৈঠকে নয়টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ পরিপত্র জারি করা হলো।