জাতীয়

ফ্যামিলি কার্ডের সুফল না পাওয়ার অভিযোগ

সরকার রাজধানীসহ সারাদেশের নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)'র মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে ফ্যামিলি কার্ড দিয়ে পণ্য বিক্রি শুরু করে গত ২০ মার্চ। সরকারের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ যেন কম দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে পারেন। 

কিন্তু রাজধানী ঢাকার নিম্ন আয়ের মানুষের অভিযোগ তাদের জন্য সরকার যে ফ্যামিলি কার্ড দিয়েছে তারা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। কারণ এই কার্ড বিতরণে অনেক অনিয়ম হয়েছে।

রাজধানীর ঝিগাতলার মনেশ্বর রোড এলাকার আমানে বেগম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমি এই এলাকায় ১০ বছর ধরে বসবাস করি। আমার স্বামী নেই। ছেলের সঙ্গে থাকি। ছেলে রিকশা চালায়। আর আমি একটা বাসায় কাজ করি। টিসিবির একটা কার্ডের জন্য অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু পাইনি। তবে আমি এমনো দেখছি যে, একজনের দুইটা কার্ডও আছে। গরিবের কথা শোনার মত কেউ নেই। মূলত টিসিবির এই মাল আমাদের হক।’ 

হাজারীবাগের রিকশা চালক মান্নান মিয়া বলেন, ‘বর্তমানে সব বাজারের গায়ে আগুন। আমি দিনে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার ভাড়া মারতে পারি। এদিয়ে এখন ঢাকাতে থাকাতে চায় না। আর বাড়ি গিয়ে কি করবো? গ্রামেও তো কোনো কাজ কর্ম নেই। টিসিবির ডিলারের কাছে গেলে বলে কার্ড দেও। আমাকে কেউ কার্ড দেয়নি। আসলে সরকার আমাদের দেয়, কিন্তু তা আমাদের কাছে এসে পৌঁছানোর আগেই শেষ হয়ে যায়। এখন বেঁচে থাকাই বড় যুদ্ধ।’

হাজারীবাগ এলাকার টিসিবি’র ডিলার ফাহিম এন্ড ফারহা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মন্টু মিয়া বলেন, ‘আমাদের কার্ড দেওয়ার ক্ষমতা কম। ফ্যামিলি কার্ড জোন অফিস ও কাউন্সিলর অফিস থেকে দেয়। তারপরও আমাদের কাছে যারা আসেন তাদের আমার কার্ড পেতে সাহায্য করি। কিছু মানুষ আছে তারা কার্ড কোথায় দেওয়া হয় তা-ই জানেন না।’

ফ্যামিলি কার্ডের ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আয়শা মোকাররম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমার কাছে এখনো ২০০০ ফ্যামিলি কার্ড আছে। আমাদের কাছে যারা আসেন তাদেরেই আমার কার্ড দেওয়ার চেষ্টা করি। এমনকি আমার এখানে ভোটার না, তাদেরকেও কার্ড দেই। আমি শুক্রবার (১২ আগস্ট) জুমার নামাজে মসজিদে কার্ড বিতরণের কথা বলার ব্যবস্থা করবো। এমন কিছু নিম্ন আয়ের মানুষের আছে আমাদের অফিস বা কীভাবে কার্ড নিতে হয় জানে না। তাই আমার এই ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

প্রসঙ্গত, টিসিবি কম দামে চাল, ডাল, চিনি, তেল ও পেঁয়াজের মতো কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি করছে।