সারা বাংলা

চা শ্রমিকরা কাজে ফিরতে মুখিয়ে, অপেক্ষা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার লালচান্দ চা বাগানের শ্রমিক জোনাকি বিশ্বাসের মনে অনেক কষ্ট। কিন্তু তিনি বলার মতো কাউকে পাচ্ছেন না। আর কেউ তার কথা শুনছেও না। 

বয়স বাড়ায় শরীরে আর মানছে না, তারপরও কাজে যেতে হয়। নিত্যপণ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দৈনিক মজুরি ১২০ টাকায় চলা সহজ নয়। হাতে টাকা না থাকায় ভালমানের কাপড় পরতে পারেন না। খেতে পারেন না উন্নতমানের খাবার। সুদিনে ফেরার জন্য ৩শ টাকা মজুরি দাবি করেছেন। তার বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের এ দাবি পূরণ করে দিবেন। তিনি সে আশাতেই রয়েছেন। 

আলাপকালে চা শ্রমিক জোনাকি বিশ্বাস আরও জানান, পেটভরে খেয়ে শান্তিতে ঘুমাতে চান। এজন্য দ্রুত মজুরি বৃদ্ধি খুবই জরুরী।

একই বাগানের বাসিন্দা অরুঝ বাউরী বলেন, পেটে নেই ভাত। নেই পর্যাপ্ত কাপড়। বসবাসের ঘরের টিনে অজস্র ছিদ্র। এ অবস্থায় ৩শ টাকা মজুরি ছাড়া চলা যাচ্ছে না। তাদের মতো অনেক নারী ও পুরুষ চা শ্রমিকের সঙ্গে আলাপকালে প্রায় একই রকমের বক্তব্য পাওয়া যায়।  

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শনিবার (২৭ আগস্ট) পূর্ণদিবস ধর্মঘটের ১৫ তম দিন।  

এদিকে বিকেলে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বাগান মালিকদের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ কথা জানায় শ্রমিকদের মাঝে কিছুটা হলেও স্বস্তি এসেছে। সাধারণ শ্রমিকরা মনে করেন, এ সভা থেকে সমাধান আসবে। আর সে আশাতেই শ্রমিকরা এখন কাজে ফেরার অপেক্ষায়।  

সাধারণ শ্রমিকরা জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদেরকে ভোটের অধিকার দিয়েছিলেন। এখন তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চাওয়া দৈনিক মজুরি ৩শ টাকা করে দেওয়ার। এতে ফিরবে চা শ্রমিকদের সুদিন।  

অন্যদিকে চা শ্রমিকদের এ ধর্মঘটে বিরাট আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন জেলার চুনারুঘাট, বাহুবল, নবীগঞ্জ ও মাধবপুরের ফাঁড়িসহ ৪১টি চা বাগানের মালিকরা।

বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা গেছে, চা গাছের পাতাগুলো অনেক লম্বা হয়েছে। এভাবে থাকায় পাতাগুলো উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। এর আগে উত্তোলন করা পাতাগুলো শুকিয়ে একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।  

৩শ টাকা মজুরি আদায়ে ৯ থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত দৈনিক দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের ১০ জন শ্রমিক নেতার সঙ্গে শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসলেও আলোচনা ফলপ্রসু হয়নি। তাই শনিবার (১৩ আগস্ট) থেকে টানা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন চা শ্রমিকরা।