ক্যাম্পাস

উঁকি দিচ্ছে জলপাই, তৈরি লবণ-লংকা

জাম থেকে জামরুল, জলপাই থেকে তেঁতুল বা বেল থেকে কদবেলের মতো নানা বৈচিত্র্যময় ফল পাওয়া যায় রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে। ঋতুভেদে হরেক রকমের ফল পাওয়া গেলেও বর্তমানে জলপাই শিক্ষার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে।

কলেজের বিজ্ঞান ভবনের ঠিক গা ঘেঁষে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে দৈত্যাকার বিশাল জলপাই গাছ। গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে অপরিপক্ব জলপাই। প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা চোখ বুলিয়ে যাচ্ছেন জলপাইয়ের থোকায় থোকায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিনিয়ত মিলছে জলপাইয়ের খবর। ক্যাম্পাসের ফেসবুক গ্রুপে গ্রুপে এখন জলপাইয়ের গুণগান।

টক স্বাদের জলপাই ফলটি আমাদের দেশে শুধু শীতের সময়টাতে পাওয়া যায়। শীতের আসতে দেরি এখনও মাসখানেক কিন্তু থেমে নেই বন্ধুমহলে জলপাইয়ের জয়গান। অনেকের মনেই সৃষ্টি হচ্ছে তাড়না। গাছ থেকে জলপাই পেড়ে লবণ-লংকা মেখে খেতে আর তর সইছে না। অনেকে জলপাই গাছের ছবি তুলে ফেসবুক পোস্ট দিচ্ছেন। তা দেখে জিভে জলে টইটম্বুর হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

শাকিল আহমেদ ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ। তিনি নিয়মিত ক্যাম্পাসে আসেন, মাঝে মাঝে জলপাইয়ের খবর প্রচার করেন বিভিন্ন গ্রুপে। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসের প্রতিটি জিনিসই আমাকে টানে। কিন্তু তা যদি আবার ক্যাম্পাসের জলপাই হয় তাহলে তো কথা-ই নেই। বন্ধুদের সাথে মিশে লবণ-লংকা মিশিয়ে জলপাই খাওয়ার মজাই আলাদা। এবার ক্যাম্পাসের গাছে বেশ জলপাই ধরেছে। মাত্র গুটি হচ্ছে জলপাই। বড় হলে বন্ধুমহলের সকলে মিলে জলপাইয়ের আমেজে মেতে উঠব।

ফাতেমাতুল জান্নাত অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, টক জাতীয় ফলগুলোর মধ্যে জলপাই আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয়। জলপাইয়ের কথা শুনলেই জিভে জলে ভেসে যায়। লবণ-লংকা দিয়ে খেতে অনেক উপভোগ করি। প্রত্যহ ক্যাম্পাসের জলপাইয়ে চোখ বুলায়। ইচ্ছে আছে এবার ক্যাম্পাসে সব বন্ধুরা লবণ মরিচ মেখে জলপাই খাব। এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি জলপাইয়ের স্বাদে মেতে উঠার জন্য। 

তবে শত আলোচনার মধ্যেও কিছু শিক্ষার্থীদের মাঝে রয়েছে শঙ্কা। তারা বলছেন, ক্যাম্পাসে হরেক রকমের ফল হয়ে থাকে। কিন্তু কখনও পরিপক্ব হওয়ার আগে খেতে পারি না। অপরিপক্ব অবস্থায় কিছু শিক্ষার্থীরা ফলগুলো গাছ থেকে পেড়ে নষ্ট করে ফেলে। নিজেরাও খেতে পারে না আবার অন্যদেরও খেতে দেয় না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী বলেন, এইতো কিছুদিন আগে ক্যাম্পাসে আম, লেবু ও জামরুল ফলের করুণ অবস্থা হয়েছিল। পরিপক্ব হওয়ার পূর্বেই শিক্ষার্থীরা অপরিপক্ব অবস্থায় ফলগুলো গাছ থেকে পেড়ে নষ্ট করেছিল। অনেক অপরিপক্ব ফল ক্যাম্পাসের অলিগলিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

তবে সময়ের পরিক্রমায় শিক্ষার্থীরা সচেতন হচ্ছে। ক্যাম্পাসের ফল রক্ষায় কলেজ প্রশাসনকে রক্ষণশীল ভূমিকা পালন করতে হবে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি অপরিপক্ব ফল রক্ষার জন্য নিজেদেরও বেশি সচেতন হতে হবে বলে মনে করছেন।