ক্যাম্পাস

পবিপ্রবিতে ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’ মনোনয়ন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০১৯, ২০, ২১ মনোনয়ন তালিকা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মনোনয়নপ্রত্যাশী একাংশের অভিযোগ, পদকপ্রাপ্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অফিস থেকে ইউজিসিতে পাঠানো তালিকা প্রস্তুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সঠিকভাবে অনুসরণ করা হয়নি। অন্যদিকে, রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে বলা হচ্ছে, এবছর প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক মনোনয়নের তালিকা প্রস্তুত ও নাম সুপারিশের ক্ষেত্রে ইউজিসির সকল নিয়মকানুন যথাযথ ভাবে অনুসরণ করা হয়েছে। 

মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সাথে সর্বোচ্চ সিজিপিএ প্রাপ্ত অনিয়মিত শিক্ষার্থীর তালিকা পাঠানোয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক বিজ্ঞপ্তির ধারা-৬ এ উল্লেখ করা রয়েছে, ২০১৯, ২০ ও ২১ সালের প্রত্যেক অনুষদের সকল রিজেন্ট বোর্ড/একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক অনুমোদিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ নম্বরধারী ৩ জনকে হাইলাইট করে মনোনয়নের সাথে ইউজিসিতে পাঠাতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, পবিপ্রবির একাডেমিক প্রোফাইলের অনুচ্ছেদ ২৩ (শেষ লাইনে) এ উল্লেখ করা হয়েছে, যদি কোনও শিক্ষার্থীর কোনও প্রকার রিপিট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে তবে সে মেরিট এ্যাওয়ার্ডের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না। এই নিয়মের কারণেই সর্বোচ্চ সিজিপিএ থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর আগে অনিয়মিত কাউকে তালিকায় নাম পাঠানো হয়নি।

ইউজিসি কর্তৃক প্রকাশিত প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকের বিজ্ঞপ্তি ও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা ২০১৫ সাল থেকে একইরকম থাকা সত্ত্বেও ইতোপূর্বে কোনও অনিয়মিত শিক্ষার্থীকে সর্বোচ্চ সিজিপিএ প্রাপ্ত হওয়ার পরও মেরিট দেওয়া হয়নি। একইসাথে ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’ অথবা ‘রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক’ প্রাপ্তির তালিকার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নাম অন্তর্ভুক্ত অথবা সুপারিশ করা হয়নি। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড পরিবেশ বিজ্ঞান অনুষদের ২০১০-১১ সেশনের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ইব্রাহিম খলিলের সিজিপিএ ৩.৯৭। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঐ অনুষদের যার নাম পাঠানো হয় তার সিজিপিএ ৩.৯০।

এ বিষয়ে পবিপ্রবির ২০১০-১১ সেশনের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমার সর্বোচ্চ সিজিপিএ থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেরিট পজিশন দেয়নি এবং প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকের জন্য নাম পাঠায়নি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জরী কমিশনে বৃত্তি শাখার দায়িত্বে থাকা সিনিয়র সহকারী সচিব জহিরুল ইসলাম বলেন, এই জটিল বিষয়টিতে আমরা আগে অবগত ছিলাম না। ইতোমধ্যে এটি নিয়ে দুটি অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। আমাদের স্টিয়ারিং কমিটি আছে। বিষয়টি সেখানে উপস্থাপন করা হবে এবং তখন এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, এবছর নিয়মিত এবং রিপিট পরীক্ষার্থীদের দুটি লিস্ট পাঠানো হয়েছে। রিপিট পরীক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সিজিপিএ থাকলেও আগের বছরগুলোতে নাম না পাঠানোর কারণ জানতে চাইলে বলেন, বিষয়টি নিয়ে তখন আলোচনা হয়নি তাই ভাবাও হয়নি।

এ বিষয়ে পবিপ্রবির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবং শিক্ষাবৃত্তি শাখার কর্মকর্তার সাথে ইউজিসি কর্মকর্তাদের আলাপ হয়; সেখানে দুটি লিস্ট পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এখন ইউজিসি যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই হবে।