পজিটিভ বাংলাদেশ

শিমের মাচায় দুলছে রঙিন ফুল, ছড়াচ্ছে সৌন্দর্য

দূর থেকে তাকালেই দেখা যায় শিমের মাচায় সবুজের সঙ্গে দুলছে রঙিন ফুল। সাদা এবং বেগুনি রঙের মনোমুগ্ধকর ফুলে প্রকৃতি যেন নতুন রূপে সেজেছে। মৌসুম শুরুর আগেই এমন মনোরম দৃশ্যে ভরে উঠেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকার শিম ক্ষেতগুলো। এসব ক্ষেতের সৌন্দর্য আবহমান গ্রাম বাংলার এক অন্যরকম দৃশ্যকে তুলে ধরছে। 

আর তাই আগাম শিম চাষে ভালো ফলনের পাশাপাশি লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পঞ্চগড়ে শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম শিমের আবাদ। বিগত কয়েক বছর ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে আগাম জাতের শিম। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন এ সবজিটি আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। 

সরেজমিনে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ও হাফিজাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, শীত শুরু না হতেই ফুলে ভরে উঠেছে শিমের ক্ষেত। পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। আগে বাজারে নামাতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যাবে এমন প্রত্যাশা তাদের। তাই মৌসুম শুরুর আগেই অনেকটা প্রতিযোগিতার মতোই শিমের আবাদ করেছেন তারা।

হাড়িভাসা ইউনিয়নের পাইকানিপাড়া এলাকার চাষি আইনুল হক বলেন, ‘চার বিঘা জমিতে শিমের আবাদ করেছি। ইতোমধ্যে  শিম আসতে শুরু করেছে। ভালো দাম পেলে আশা করছি আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবো।’

একই এলাকার কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর দুই বিঘা জমি থেকে দেড় লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছি। এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে সবজিটি আবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকার মতো। ভালো দাম পেলে ২ লাখ টাকারও বেশি দামে উৎপাদিত শিম বিক্রি করতে পারবো।’

গত বছর এক বিঘা জমির শিমের আবাদে লাভ হওয়ায় এবার দুই বিঘা জমিতে শিম করেছেন হাফিজাবাদ ইউনিয়নের কামারপাড়া এলাকার কৃষক রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দুই বিঘায় খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। আবাদ ভালো হয়েছে, বিক্রিও শুরু করছি। জমি থেকেই পাইকাররা ১০০ টাকা কেজি দরে শিম কিনছেন। মৌসুমের শেষ পর্যন্ত এই দাম থাকলে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা পাবো বলে আশা রাখি।’ 

কৃষক আলিউল ইসলাম বলেন, ‘মৌসুমের শুরুর দিকে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে জমি থেকেই শিম নিয়ে যায় ব্যবসায়ীরা। তবে আমদানি বাড়লে দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় নেমে যেতে পারে। তারপরও ভালো লাভ হবে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর পঞ্চগড় জেলায় ২৬০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছিলো। এ বছর তা বেড়ে আবাদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬৫ হেক্টর।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক শাহ মুহম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকা শিম চাষের জন্য বেশ সম্ভাবনাময়ী। এটা শীতকালীন সবজি হলেও এখন প্রায় সব মৌসুমেই চাষ হচ্ছে। ভালো উৎপাদনের জন্য কৃষকদের সব ধরণের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।’