দেহঘড়ি

মলদ্বারে চুলকানি হলে করণীয় কী?

অনেকেই মলদ্বারের চুলকানির সমস্যায় ভোগেন। রাতের বেলায় মলদ্বার বেশি চুলকালে অনেকেই পাইলস হয়েছে বলে ভাবেন। 

মলদ্বারে বিভিন্ন কারণে চুলকাতে পারে। কারো যদি দেখা যায় এনালফিশিয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রে চুলকাতে পারে। কারো যদি কৃমি থাকে, সেক্ষেত্রেও মলদ্বার চুলকাতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে মলদ্বারে ছোট্ট ছিদ্র হয়ে ফিস্টুলা হয়, যেটা থেকে পুঁজ-পানি বের হয়, তখনও কিন্তু মলদ্বার চুলকাতে পারে। এছাড়া কারো যদি মলদ্বারে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়, সেক্ষেত্রেও চুলকানি হতে পারে। 

কাজেই কারো যদি মলদ্বারে চুলকানি থাকে, তাহলে সঠিকভাবে রোগের ইতিহাস নিতে হবে- এটা কেন হচ্ছে, এটার সঙ্গে অন্য কোনো উপসর্গ আছে কি না? এক্ষেত্রে অবশ্যই রোগীকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। প্রটোস্কোপি করে চিকিৎসক রোগ নির্ণয় করেন।

অনেকে দীর্ঘদিন ধরে মাঝেমধ্যেই কৃমি ওষুধ খেয়ে থাকেন। তারা হয়তো মনে করে থাকেন, মলদ্বারের চুলকানিটা কৃমির জন্য হচ্ছে। কিন্তু আমরা অনেক রোগী পাই যে, তার রোগটা হচ্ছে এনালফিশিয়া। মলদ্বারে চুলকানি হলে নিজে নিজে চিকিৎসা না করে বা নিজে নিজে কৃমির ওষুধ না খেয়ে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। 

মলদ্বারে যেকোনো রোগই হোক না কেন, সাধারণ মানুষ মনে করে তা পাইলস বা অর্শ বা গেজ। অনেকের ধারণা নেই যে, এর বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা রয়েছে। চিকিৎসা করালে সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব।

অনেকে আবার মলদ্বারে মরণব্যাধি ক্যানসার নিয়ে পাইলসের চিকিৎসার জন্য কবিরাজ, হেকিম কিংবা কোনো হাতুড়ে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হচ্ছেন। সেক্ষেত্রে তারা অপচিকিৎসার মাধ্যমে প্রতারিত হচ্ছেন এবং বলছেন মলদ্বারের চিকিৎসা করে ভালো হয় না। তবে এটা সম্পূর্ণ একটি ভ্রান্ত ধারণা। চিকিৎসক রোগ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দিলেই মলদ্বারের রোগ থেকে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। 

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক (সার্জারি), জেনারেল ও কোলো রেকটাল সার্জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল