পজিটিভ বাংলাদেশ

কবুতর বিক্রির টাকায় চলছে পড়ালেখার খরচ

ভোলার লালমোহন উপজেলার বাসিন্দা মো. রাব্বি। শখের বসে দেশি জাতের ৩ জোড়া কবুতর পালতে শুরু করেন অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থী। শখ থেকে শুরু করা এই কবুতর পালনই হয়ে উঠেছে তার আয়ের অন্যতম উৎস। কবুতর ও  বাচ্চা বিক্রির টাকায় চলছে তার পড়ালেখার খরচ।

উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের পাঙ্গাশিয়া গ্রামের মো. ফারুক মিয়ার ছেলে রাব্বি। তিনি ভোলা সরকারি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাকে কবুতর পালনে সহযোগিতা করছেন তার মা ও বাবা। ইতোমধ্যে রাব্বির দেখাদেখি ওই গ্রামের আরও অনেক শিক্ষার্থী শুরু করেছেন কবুতর পালন।

রাব্বির বলেন, ‘শাহাবুদ্দিন মামার কাছ থেকে ২০১৭ সালে জানুয়ারি মাসের দিকে ৩ জোড়া কবুতর নিয়ে আসি। তখন আমি নবম শ্রেণিতে পড়তাম। সেই তিনি জোড়া কবুতর এখন হয়েছে ৫০/৬০ জোড়া।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাড়ি থেকে বাচ্চা কবুতর বেশি বিক্রি হয়। বড় হলে গ্রামে বাজারগুলোতে গিয়ে বিক্রি করি। আবার মাঝে মধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে বেপারীরা বাড়িতে এসে কবুতর কিনে নিয়ে যান। এতে আমার প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকার মতো আয় হয়। বিগত ৪-৫ বছর ধরে কবুতর বিক্রি করে পাওয়া আয় দিয়েই নিজের পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছি।’

রাব্বির বাবা ফারুক মিয়া বলেন, ‘ছেলে শখ করে কবুতর পালন শুরু করে। বর্তমানে সে কবুতর পালন বাণিজ্যিকভাবে শুরু করে দিয়েছে। এখন আমাদের আর ওকে পড়ালেখার খরচ দিতে হয় না। নিজের পড়ালেখার খরচের পরেও তার মাকে ঈদ আসলে শাড়ি-জুতাসহ বিভিন্ন কিছু কিনে দেয় রাব্বি। 

লালমোহন উপজেলার উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (সম্প্রসারণ) মো. বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বেকার যুবক ও শিক্ষার্থীরা চাইলে গৃহপালিত পশু ও পাখি পালনের উদ্যোগ নিতে পারেন। বিভিন্ন প্রজাতির এসব পশু ও পাখি তারা বাজারে বিক্রি করে নিজেদের পড়ালেখার পাশাপাশি পরিবারের খরচ বহন করতে পারবেন। রাব্বিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে কবুতর পালনের ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

লালমোহন উপজেলার প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নাসির উদ্দিন মুন্সী বলেন, ‘অর্থের অভাবে যে সব শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার খরচ বহন করতে সমস্যা হচ্ছে তারা এ পেশায় আসতে পারেন। যদি তারা আমাদের অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাহলে তাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হবে।’