সাতসতেরো

গোলের জন্য জীবন দিতে হয়েছিল এই ফুটবলারকে

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। ফুটবলে জয় নির্ধারণ হয় গোলের মাধ্যমে। খেলার মাঠে কত শত গোলই তো হয়েছে, কিন্তু গোলের জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে- ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল। 

গোল করার জন্য (আত্মঘাতী গোল) জীবন দিতে হয়েছিল কলম্বিয়ান ফুটবলার আন্দ্রেস এস্কোবারকে। এই ফুটবলারের বুকে একে একে গেঁথে দেওয়া হয়েছিল ছয়টি বুলেট। এবং প্রতিবার গুল করার সময় ঘাতক চিৎকার করে বলেছিল- গোল গোল গোল!

১৯৬৭ সালের ১৩ মার্চ কলম্বিয়ার মেডেলিনে জন্ম নেন এস্কোবার। পুরো নাম আন্দ্রেস এস্কোবার সালদারিগা। বাবা ছিলেন ব্যাংকার। ছোটবেলা স্কুলেই ফুটবলে হাতেখড়ি হয় এস্কোবারের। বড় ভাই সান্টিয়াগো ফুটবলের সাথে যুক্ত থাকায় ফুটবলেই মনোনিবেশ করেন তিনি। 

প্রফেশনাল ফুটবলে আন্দ্রেস এস্কোবার ডিফেন্ডার হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। জার্সি নাম্বার ছিল দুই। মাঠে ‘জেন্টলম্যান’ হিসেবে পরিচিত ছিল তার। খেলেছেন কলম্বিয়ার ক্লাব এটলেটিকো ন্যাশনালে, এই ক্লাবের হয়ে খেলেছেন ৭৮টি ম্যাচ এবং খেলেছেন সুইস ক্লাস ইয়ং বয়েজে। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের আগে ডাক পান  এসি মিলানে।

১৯৮৮ সালের ৩০ মার্চ কলম্বিয়ার জাতীয় দলে অভিষেক হয় আন্দ্রেস এস্কোবারের। সেই ম্যাচে ৩-০ গোলে জয় পায় কলম্বিয়া। তবে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় একই বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রোজ কাপে৷ সেই ম্যাচে দলের একমাত্র গোলটিও করেন তিনি। ১৯৮৯ এর কোপা আমেরিকায় খেলেছেন চারটি ম্যাচ। একই বছর বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দারুণ পারফর্ম করে কলম্বিয়া মূল দলে জায়গা করে নেন তিনি। এরপর সুযোগ পান দলের হয়ে ১৯৯০ বিশ্বকাপে অংশ নেয়ার। বিশ্বকাপেও দারুণ শুরু করে তার দল। জায়গা করে নেয় শেষ ১৬-তে। 

১৯৯৪ সালের ২২ জুন। বিশ্বকাপে কলম্বিয়ার ২য় ম্যাচ ইউনাইটেড স্টেটস-এর বিপক্ষে। বিপত্তিটা ঘটলো তখনই। যখন আমেরিকান ফুটবলার জন হার্ভসের ডি বক্সের বাইরের থেকে উঁচু করে আসা বলটি সেভ করতে দিয়ে আন্দ্রেস এস্কোবার জড়িয়ে দেয় নিজের জালে। প্রত্যেকের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো! আত্মঘাতি সেই গোলে এগিয়ে যায় প্রতিপক্ষ। সেই ম্যাচ কলম্বিয়া হারে ২-১ ব্যবধানে। 

আত্মঘাতি গোল দেওয়ার পর নানাভাবে হুমকি পেতে থাকেন এস্কোবার। সে বছর তিনি যখন খেলা শেষে দেশে ফিরে যান; ২ জুলাই দুবৃত্তরা তাকে আক্রমণ করে। তাদের ছোড়া গুলিতেই মারা যান এই ফুটবলার।