খেলাধুলা

চিন্তা নেই, বল গায়ে লাগলেও আউট হবো না : মিরাজকে মোস্তাফিজ 

ড্রেসিং রুম থেমে মোস্তাফিজুর রহমান যখন গুটি গুটি পায়ে উইকেটের দিকে এগোচ্ছিলেন, তখন বাইরেই কেউ বিশ্বাসই করেনি বাংলাদেশ এই ম্যাচে জিতবে। গ্যালারির আসন তখন ফাঁকা হচ্ছিল। আত্মবিশ্বাসী ছিলেন শুধু মেহেদি হাসান মিরাজ এবং মোস্তাফিজ-আর তাতেই আসে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় জয়। 

কথায় আছে, ‘বিশ্বাসে মেলায় বস্তু’। বন্ধু মিরাজ-মোস্তাফিজ কথার প্রমাণ দিয়েছেন হাতেনাতে, চোখে আঙুল দিয়ে। ১৮৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশ ১৩৬ রানে হারায় নবম উইকেট। মোস্তাফিজ যখন মাঠে ঢুকছিলেন তখন মিরাজ এগিয়ে এসে তাকে নিয়ে যান। এ সময় দুজন নিজেদের পরিকল্পনাও সাজিয়ে নেন। আর এর পরের গল্প শুধু ইতিহাস। 

কি কথা হয়েছিল তাদের মধ্যে? ১ উইকেটে ভারতবধের পর মিরাজ শোনালেন সেই গল্প,   ‘মোস্তাফিজ আমার ভালো বন্ধু, ও খুব ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। ওর একটা জিনিস আমার খুব ভালো লেগেছে ও খুব আত্মবিশ্বাসী ছিল। ও আমায় একটা কথা বার বার বলছিল আমাকে নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই, আমি ঠিক (আছি), আমি আউট হব না। যদি গায়েও বল লাগে সমস্যা নাই, আউট হব না। ওর এই আত্মবিশ্বাস আমার খুব ভালো লেগেছে এবং আমার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে ওটা দেখে।’

রোববার তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতকে ১ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ভারত টস হেরে আগে ব্যাটিং করে ১৮৬ রানে অলআউট হয়। বাংলাদেশ ২৪ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে। মিরাজ ৩৯ বলে ৩৮ ও মোস্তাফিজ ১১ বলে ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন। দুজনে দশম উইকেটে অপরাজিত ৫১ রানের জুটি গড়েন। এই উইকেটে বাংলাদেশের যা সর্বোচ্ছ রানের জুটি। 

৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন ধুঁকছিল তখনো মিরাজের বিশ্বাস ছিল বাংলাদেশ জিতবে। যতটুক পেরেছেন স্ট্রাইকে থাকার চেষ্টা করেছেন নিজে। ২ রানের শট খেলেও রন নেননি। ফাঁকে ফাঁকে হাঁকিয়েছেন দারুণ সব চার। মোস্তাফিজ যেন ছিলেন আশীর্বাদ হয়ে। উইকেট কামড়ে পড়েছিলেন, হাঁকিয়েছেন ২টি চার। 

‘আমরা ব্যাটসম্যানরা হয়তো মাঝ খানে খেলা একটু নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছি কিন্তু খেলা কিন্তু আমাদের হাতেই ছিল। শুরু থেকেই আমাদের হাতে ছিল। আপনি দেখেন রানের চাপ কিন্তু বেশি ছিল না। ৩.৮০ মতো করে লাগত ওভার প্রতি। কিন্তু ব্যাক টু ব্যাক উইকেট যাওয়াতে আমাদের সমস্যাগুলো হয়েছে মাঝখানে। তারপরও আমরা জিতেছি আলহামদুলিল্লাহ’-এভাবেই বলছিলেন আত্মবিশ্বাসী মিরাজ।