অর্থনীতি

বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫ হাজার কোটি টাকার জিটিএফ ফান্ড গঠন

দেশে সবুজ অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রপ্তানি এবং উৎপাদনমুখী শিল্প খাতে টেকসই প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার জন্য গ্রীণ ট্রান্সফরমাশন ফান্ড (জিটিএফ) নামে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তহবিল থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়া হবে। ঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ। রপ্তানি ও উৎপাদনমুখী শিল্প খাতে দেওয়া হবে এ ঋণ।

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি হয়েছে।

এসএফডি বিভাগের পরিচাল মো. রজব আলী স্বাক্ষরিত সার্কুলারে বলা হয়েছে, সবুজ অর্থনীতি প্রতিষ্ঠায় রপ্তানি এবং উৎপাদনমুখী শিল্প খাতে টেকসই প্রবৃদ্ধি তরান্বিত করতে গ্রিন ট্রান্সফর্মেশন ফান্ড (জিটিএফ) গঠন করা হয়েছে। এ তহবিল হতে যোগ্য গ্রাহকদের মূলধনী যন্ত্র ও যন্ত্রাংশের আমদানিমূল্য পরিশোধ পরবর্তী ব্যাংকের অর্থায়নের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা প্রদান করা হবে।

তহবিলটির আকার হবে ৫ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব উৎস থেকে সরবরাহ করা হবে এ টাকা। গ্রাহক পর্যায়ের সুদহার হবে ৫ শতাংশ আর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পিএফআই থেকে আদায়যোগ্য সুদ হবে এক শতাংশ।

যেসব উদ্যোগের আওতায় এই সুবিধা দেওয়া হবে সেগুলো হলো-আর্দ্রকরণে পানি ব্যবহারের দক্ষতা, পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সম্পদ ব্যবহারে দক্ষতা ও পুনর্ব্যবহার, নবায়নযোগ্য শক্তি, শক্তি দক্ষতা, তাপ ও তাপমাত্রা ব্যবস্থাপনা, বায়ু চলাচল ও প্রবাহ দক্ষতা, কর্মপরিবেশ উন্নয়ন উদ্যোগ এবং সময় সময় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য ক্ষেত্রসমূহ।

এ তহবিলের আওতায় একজন ঋণ গ্রহীতার ঋণ, বিনিয়োগ-মূলধন অনুপাত হবে সর্বোচ্চ ৭০ : ৩০। তবে একক ঋণগ্রহীতা এ তহবিলের আওতায় কোনোভাবেই ২০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ সুবিধা প্রাপ্য হবেন না। পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার মেয়াদকাল প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী ৫-১০ বছর হবে। ঋণ খেলাপীরা এই তহবিলের ঋণ পাওয়ার অযোগ্য। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পিএফআই থেকে আদায়যোগ্য সুদ/মুনাফার হার ১ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে সুদ/মুনাফার হার হবে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ। পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার ধরন হবে মেয়াদী ঋণ/বিনিয়োগ। পিএফআই ও গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের গ্রেস পিরিয়ড হবে এক বছর।

পুনঃঅর্থায়ন প্রাপ্তির যোগ্যতা হিসেবে বলা হয়েছে, সব রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার আওতায় ঋণ দিতে পারবে। বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের ক্ষেত্রে শ্রেণিকৃত ঋণ বা বিনিয়োগের (ক্লাসিফাইড লোন) হার ১০ শতাংশের কম হতে হবে। একক গ্রাহক বা গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে ঋণ, বিনিয়োগ সুবিধার সর্বোচ্চ সীমা সংক্রান্ত ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর নির্দেশনাসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের জারিকৃত বিআরপিডি সার্কুলার নম্বর ১/২০২২-এ বর্ণিত নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সব নীতিমালার পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ (২০১৮ সালে সংশোধিত) এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ সার্কুলার জারি করা হয়েছে যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।