সারা বাংলা

কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি কোনো সম্মেলন বা বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই আনন্দ মোহন কলেজ শাখাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ছাত্রলীগের মোট ৯টি কমিটি ঘোষণার পর জেলাজুড়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে বলে জানা গেছে। পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি কমিটি দেয়ার নামে সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পদ বাণিজ্য করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ক্যাম্পাসে দুই পক্ষ একই অবস্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে। এ সময় দু'পক্ষই পরস্পরবিরোধী স্লোগান দেয়। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতারা মিছিল করে নগরীর টাউন হল মোড় এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। বিকালের দিকে নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীরা মিছিল করে টাউন হল এলাকায় এলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম জানা যায়নি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন গ্রুপের নেতা ও আনন্দ মোহন কলেজের নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক শেখ সজল বলেন, দীর্ঘ দুই বছর পর আমাদের কমিটি হয়েছে। তাই আমরা নেতাকর্মীরা একসঙ্গে স্লোগান দিচ্ছি। আমরা কাউকে হামলা করিনি।

অন্যদিকে জেলা ছাত্রলীগের হুমায়ুন কবির গ্রুপের নেতা ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহফুজুল আলম ফাহাদ অভিযোগ করে বলেন, আল আমিন ও ইমরান হোসেন অলি অর্থের বিনিময়ে কমিটি দিয়েছে। আমরা যারা দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির  মাধ্যমে এর প্রতিবাদ করছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করেছে। 

উল্লেখ্য গত ৩ ডিসেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি সদর, ফুলবাড়িয়া, গৌরীপুর, ত্রিশাল, ত্রিশাল পৌর এলাকা, ভালুকা, ঈশ্বরগঞ্জ, ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকা, মুক্তাগাছাসহ ৯টি এলাকায় ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করে। এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, আমি স্বপদে বহাল হওয়ার খবর পাওয়ার পরপরই ইমরান হোসেন অলি ও আল আমিন কমিটি দিয়েছে। যা সম্পূর্ণ  অবৈধ ও নিয়ম বহির্ভূত।

এ বিষয়ে আল আমিন বলেন, আমরা অবৈধ কোনো কমিটি দেইনি। কারণ, হুমায়ুন কবির ৬ তারিখ পদবি ফিরে পেয়েছে। আমরা ২ তারিখ থেকে ৫ তারিখ রাত ১২টার আগেই কমিটি ঘোষণা করেছি। কেউ যদি অর্থ সুবিধা নিয়ে কমিটি দিয়েছি প্রমাণ করতে পারে তাহলে যে কোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব। 

উল্লেখ্য চলতি বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে অভিযোগ তদন্তে দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর প্রায় একমাস পর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান ইমরান হোসেন অলি। গত ৬ ডিসেম্বর তদন্ত শেষে কেন্দ্রীয় কমিটি পুনরায় হুমায়ুন কবিরকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ফিরিয়ে দেয়।