জাতীয়

ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে: হাইকমিশনার

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, ভারত ১৯৭১ সালে যেভাবে বাংলাদেশের পাশে ছিল এখনও তেমনি আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।

তিনি বলেন, দু’দেশের সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়েছিল সেই ৭১- এ। সেই যাত্রা এখনও বহমান। আগামীতেও আরও গভীর হবে এই সম্পর্ক। সাউথ এশিয়াতেই নয়; পুরো বিশ্বই দু’দেশের সম্পর্ক দেখছে।

‘মিট দ্য সোসাইটি’ শিরোনামে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাজধানীর একটি হোটেলে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এই কথা বলেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সম্প্রীতি বাংলাদেশ।

এতে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায় সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব বিশিষ্ট চিকিৎসক ও কলামিস্ট ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।

হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা আরও বলেন, কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। সেগুলো মোকাবিলায় সম্মিলিত কাজ করছি আমরা। তরুণদের কাছে ৭১-এর চেতনা পৌঁছে গেছে। ইয়ুথ ডেলিগেশন চলছে দু’দেশের মধ্যে। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। তাহলে আরও এগুবে সম্পর্ক।

প্রণয় ভার্মা বলেন, নরেন্দ্র মোদির কথা মত দু’দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও একসাথে কাজ চালিয়ে যাবো।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো শামসুল হক টুকু বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন শাসক, রাষ্ট্রনায়কের সামনে কী কৌশল কী চতুরতার সাথে ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তা সারা বিশ্ব দেখেছে। সেটা থেকে আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। কৃষক-মজুর বুদ্ধিজীবী চিকিৎসকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ সেই যুদ্ধ করেছি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে ডেপুটি স্পিকার বলেন, ভারত ও বাংলাদেশে ঐক্যবদ্ধ শক্তি তৈরি করার সময় এখন এসেছে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। নিজেদের কিছু ত্যাগ করে হলেও আমাদের বন্ধুত্ব যাতে নষ্ট না হয়।

ডেপুটি স্পিকার বলেন, এক কোটি শরণার্থী ত্রিপুরা আশ্রয় দিয়েছিল। তিনি বলেন, পক্ষান্তরে বঙ্গবন্ধু বহুমুখী পদক্ষেপ দিয়ে অনেক আগে থেকে মুক্তিযুদ্ধ গুছিয়ে এনেছিলেন। ৭ মার্চ কেবল আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভারত সরকার মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছে। মিসেস গান্ধি করেছেন। অস্ত্র দিয়েছেন। ত্রিপুরার মানুষকে কীভাবে ভুলে যাই? ত্রিপুরার মানুষ নিজেদের জনসংখ্যার বেশি মানুষকে খাইয়েছে। থাকতে দিয়েছে। আসাম পশ্চিম বঙ্গ এইভাবে এগিয়ে এসেছে। বিহারে অবাঙ্গালিরাও আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতার হাত বাড়িছে। এমনকি, বোম্বের ফিল্ম তারকারা বাংলাদেশের জন্য তহবিল সংগ্রহ করেছেন।  

তিনি বলেন, নদীয়ায় স্বাধীন বাংলা ফুটবল টিমের ম্যাচ ঘিরে ঐতিহাসিক জমায়েত হয়েছে। নদীর মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ফুটবল ম্যাচের মাঠে বাংলাদেশের পতাকা উড়বে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজ্জাদ আলি জহির বীরপ্রতীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) সাহাব উদ্দিন বীর উত্তম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক হারুন অর রশীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সচিব মুসা সাদিক, ড. পবিত্র সরকার, ব্যারিস্টার তানিয়া আমির, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর কামরুল হাসান খান প্রমুখ।