রাজনীতি

বিএনপির আন্দোলন: ঘোষণা হতে পারে নতুন কর্মসূচির

পূর্বঘোষিত বিএনপির গণমিছিল আজ দুপুরে রাজধানীতে শুরু হতে যাচ্ছে। বিএনপির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে সরকারবিরোধী সমমনা দলগুলোর প্রথম যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি আজকের ‘গণমিছিল’।

শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে পৃথকভাবে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে গণমিছিল ও সমাবেশ করার জন্য সরকারবিরোধী বিভিন্ন দল ও জোটের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়েছে। এসব দল ও জোটের পক্ষ থেকে আগামীতে এক দিনের অভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে বলেও জানা গেছে।

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক গণতন্ত্র মঞ্চসহ অন্য দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি, মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গণ-অবস্থান ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হবে। জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এসব কর্মসূচি আসতে পারে বলেও জানান নেতারা।

বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া যুগপৎ আন্দোলনে শরিকদের ঐক্যবদ্ধ রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়া বিএনপির জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা জানি, শরিকদের সামনে আগামীতে বিভিন্ন পক্ষ থেকে নানা লোভনীয় প্রস্তাব আসবে। এজন্য বিএনপিকে সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়ার প্রস্তুতি রাখতে হবে। এছাড়া এ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করতে হবে। এ সময় শরিকদের প্রতি সর্বোচ্চ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। 

বিএনপির এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে নতুন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করা এবং আগামী মার্চের মধ্যে এর একটা রূপ দেওয়া বলেও মনে করেন বিএনপির একাধিক নেতা।

বিএনপির সরকার বিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের বড় শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ। শুক্রবার রাজধানীতে সকালে তারাও গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। এটা নিয়ে কিছুটা ‘অস্বস্তি’ রয়েছে বিএনপির মধ্যে। বিএনপি নেতারা বলছেন, গণমিছিল শেষে বিএনপির পক্ষ থেকে একটা কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে। এখন বেলা ১১টায় গণতন্ত্র মঞ্চ তাদের কর্মসূচি শেষ করে যদি নতুন কর্মসূচির ডাক দেয় তাহলে বিএনপির ঘোষণা স্বাভাবিকভাবে কিছুটা গুরুত্ব হারাবে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, শুক্রবার আমাদের গণমিছিল ঠেকাতে, উসকানি দিতে ইতোমধ্যে সরকার তাদের মাস্তানদের পাড়ায়-মহল্লায় থাকার নির্দেশ দিয়েছে। আমরা আমাদের কর্মীদের কোনো প্রতিরোধ করতে বলিনি। অতীতে সরকারের উসকানি, অত্যাচার-নির্যাতনের পরও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছি আমরা। আগামীতেও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করব।

গণমিছিল শেষে কী কর্মসূচি দেওয়া হবে— জানতে চাইলে টুকু বলেন, ‘এই আন্দোলন তো এক দিনেই শেষ হয়ে যাবে না। আগামী দিনের কর্মসূচি অবশ্যই আসবে অপেক্ষা করুন।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, আমাদের যুগপৎ এই আন্দোলনকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নেওয়াই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। যারা এখনও এই আন্দোলনের বাইরে আছে তাদেরও সঙ্গে করে এগিয়ে যেতে হবে আগামীতে। এই আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয় তখনই আসবে যখন সবাই একদিকে থাকবে আর সরকার একলা একদিকে থাকবে।

তিনি বলেন, সরকারের পদত্যাগসহ অন্যান্য দাবিতে শুরু হতে যাওয়া এই যুগপৎ আন্দোলনের প্রধান শক্তি হলো বিএনপি। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে গণমিছিল শুরু করে মগবাজার চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ করবে। গণমিছিলে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের জন্য ইতোমধ্যে ১১টি পয়েন্ট নির্ধারণ করে দিয়েছে দলটি।