খেলাধুলা

আত্মবিশ্বাসে মেলেছে মেহেদীর ডানা

অমিত সম্ভাবনা নিয়ে জাতীয় দলে ঢুকলেও স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান নিজের জায়গা পাকা করতে পারেননি। থিতু হতে না পারার পেছনে বড় কারণ অধারাবাহিক পারফরম্যান্স।

তবুও আস্থা রেখেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। শুরুর দিকে নতুন বলে তার ধারালো স্পিন ছিল কার্যকরী। লেট অর্ডারে টুকটাক রান করে রাখতেন অবদান। আবার কখনো কখনো পাঠানো হতো শুরুর দিকে। ব্যর্থতা-সাফল্য মিলিয়ে তার পথচলা।

ঘরোয়া ক্রিকেটেও একই চিত্র। স্পিন অলরাউন্ডার পারফর্ম করেন কালেভাদ্রে। নিজের ছায়া হয়ে থাকেন বেশিরভাগ সময়। এবারের বিপিএল যার বড় প্রমাণ। রংপুর রাইডার্সের এ ক্রিকেটার আগের ৭ ইনিংসে রান করেছিলেন ৭১। আজ ঢাকা ডমিনেটর্সকে হারানোর ম্যাচে করেছেন ৭২ রান। ৪৩ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় সাজানো ইনিংসটি খেলায় জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।

শুরুতে রান না পেলেও মেহেদীর ওপর আস্থা হারাননি তার দলের কোচ সোহেল ইসলাম, ‘আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে সে রানে ফিরবে। আমরা জানতাম যে একটা ইনিংসে বড় রান করলে ওর আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে। আমি তার ওপর আস্থাশীল ছিলাম সব সময়ই। সেজন্য আসলে ধারাবাহিক চান্স পেয়েছে।’

মেহেদীর জন্য রান করা কঠিনও হয়ে যাচ্ছিল। তার ব্যাটিং পজিশন অদল-বদল হচ্ছিল। প্রথম ম্যাচে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন। পরবর্তীতে তাকে পাঠানো হয় তিনে। এরপর ওপেনিংয়ে। আবার চারে। শেষ চার ইনিংসে তাকে নামানো হয় তিনে।

দলের কম্বিনেশনের কারণে তাকে বারবার নাড়ানো হয়েছে বলে দাবি সোহেল ইসলামের। তবে সামনে তাকে শুরুতেই ব্যাটিং করতে দেখা যাবে বলে জানিয়েও রেখেছেন তিনি।

মেহেদীর আদর্শ পজিশন শুরুর দিকেই বলে মনে করেন এই কোচ, ‘আমার কাছে মনে হয় সে উপরের দিকে ব্যাটিংয়েই ভালো। টপ অর্ডারে না করলে তাকে আটে-সাতে ব্যাটিং করতে হবে যেটা করাটা কঠিন। ওর যে ধরণের শটের রেঞ্জ, ওখানে (লোয়ার অর্ডারে) যে ধরণের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়, তার থেকে ও যদি পাওয়ার প্লেতে নামে ও যে ধরনের খেলোয়াড় তাতে সফল হওয়ার সুযোগ বেশি থাকবে।’

পাওয়ার প্লে’তে বৃত্তের ভেতরে ফিল্ডার থাকায় বল ক্লিয়ার করতে সুবিধা হয় মেহেদীর। বলের মেরিট অনুযায়ী খেলে টাইমিং মেলালেই পাওয়া যায় বাউন্ডারি। এসব মেহেদীর জন্য আদর্শ। এজন্য তার ওপর আস্থা রাখার কথা বললেন সোহেল ইসলাম, ‘আমরা যখন ওকে নিয়েছি তখনই চিন্তা ছিল ওকে নাম্বার তিনে খেলাব।  কোনো না কোনো কারণে সে রানে ফিরছিল না। এখন রানে ফিরেছে। উপরের দিকে ব্যাটসম্যানরা যদি বড় ইনিংস খেলে  তাহলে কাজটা সহজ হয়ে যায়। এই খেলাটা যদি ও ধরে রাখতে পারে তাহলে আমাদের পরবর্তী খেলাগুলো সহজ হয়ে যাবে।’

‘আমার কাছে মনে হয় একটা ছেলে যখন ডাউনওয়ার্ড যেতে থাকে সবাই মিলে ওকে ব্যাক করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন তারা খুব ক্রাইসিসের মধ্যে দিয়ে যায়। আমার বিশ্বাস ছিল সব সময়। তাকে উপরের দিকে খেলানোর জন্য যে আত্মবিশ্বাসটা সেটা দেয়া জরুরী। টেকনিক্যালি সে সাউন্ড। উপরের দিকে খেলানোর মতো। তার আত্মবিশ্বাস ফেরালেই তার থেকে রানটা আসবে।’ – যোগ করেন রংপুরের কোচ।