ক্যাম্পাস

শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও বিশ্বনেতাদের প্রশংসা

দেশ ও বিশ্ব পরিমন্ডলে শেখ হাসিনা আজ গণতন্ত্র, উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও শান্তির প্রতীক। তাঁরই নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এক সময়ের ক্ষুদ্র অর্থনীতির দেশটি আজ আবির্ভূত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বিমোচন নিশ্চিত করে বিশ্বময় শান্তি প্রতিষ্ঠার দিকে রয়েছে তাঁর নজর।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়লাভের পর বাংলাদেশের শাসনভার নিজের কাঁধে নিয়ে যে শান্তি ও প্রগতির রাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে একই নীতি অনুসরণ করে এগিয়ে চলেছেন সামনে। ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’ বিশ্বশান্তির পক্ষে বঙ্গবন্ধুর এই অমোঘ নীতিই এখনো বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র। এই মূলমন্ত্রের ওপর ভর করেই সকল বাধার পাহাড় ডিঙিয়ে দেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এদেশের সর্বকালের সফল প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা।

তাঁর শাসনামলের প্রতিটি পদে পদে রচিত হচ্ছে সফলতার ইতিহাস। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, উড়াল সেতু, পাতাল রেলের মতো অগণিত বিশ্বমানের স্থাপনা দেশের ইতিহাসে প্রথম সম্ভব হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পথ দেখাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার রাষ্ট্রনীতিকে তাঁরা অনুসরণ করছে। মহামারি করোনায় যখন গোটা বিশ্ব টালমাটাল অবস্থা তখন প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্বে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশ করোনা মোকাবেলা করেছে। সেই সঙ্গে দেশের সকল মানুষের জন্য বিনামূল্যে করোনার টিকা সংগ্রহ এবং তা নিশ্চিত করণে সক্ষমতা অর্জন করেছে আর তার কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করছেন বিশ্বনেতারা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ যে পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে, তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই সম্ভব হয়েছে বলে বিশ্বনেতারা মন্তব্য করেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে স্বাধীন করে দেশ গঠনে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই পথ অনুসরণ করে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বলে বিশ্বনেতারা উল্লেখ করেন।

প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডা, জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। 

বিশ্বনেতারা তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা, দক্ষতা ও সুদূরপ্রসারি চিন্তা-চেতনার ফলেই বাংলাদেশে সব দিক থেকে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে এবং উন্নত সমৃদ্ধ দেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলে তারা মন্তব্য করেন। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়া এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের পেছনে তারা শেখ হাসিনার ভূমিকাকে বড় করে দেখছেন। নেতাদের বক্তব্যে শেখ হাসিনার সরকারের এই সময়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতি ও সফলতার প্রশংসা উঠে আসে। মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে শেখ হাসিনা আশ্রয় দিয়ে মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলেও বিশ্বনেতারা মন্তব্য করেন। বৈশ্বিক সমস্যা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় শেখ হাসিনার সরকারের গৃহীত পদক্ষেপেরও তারা প্রশংসা করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার প্রশংসা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, আমি আনন্দিত যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে তার সক্ষমতা প্রদর্শন করছে। যারা বাংলাদেশ গঠনে আপত্তি করছিলেন, যারা এখানকার মানুষকে নিচু চোখে দেখতেন, যারা বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দিহান ছিলেন, বাংলাদেশ তাদের ভুল প্রমাণ করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের অর্থনেতিক উন্নয়ন ও রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অগ্রগতির একটি উদাহরণ। দেশটি আশা ও সুযোগ-সুবিধার একটি চমৎকার স্থান। ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশের মানবাধিকারের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। জলবায়ু সংকট নিরসনে কাজ করতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি প্রশংসনীয়। যুক্তরাজ্যের তৎকালীন  প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে অর্থনৈতিক উন্নয়নশীল রাষ্ট্র। আমরা বাংলাদেশের সমৃদ্ধির স্বপ্নের সঙ্গে থাকতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভিডিও বার্তায় বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দারুণ কিছু সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও উন্নয়নের দিকে মনোযোগী হয়েছে এবং দ্রুত বর্ধনশীল বিশ্বের কাতারে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে। ৬ শতাংশের অধিক জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) মাধ্যমে বাংলাদেশ তার দেশের মানুষের জীবনকে উন্নত করছে এবং বিশ্ব থেকে দারিদ্র্য দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। চীন বাংলাদেশের এমন উন্নয়নে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে।

শেখ হাসিনার উচ্চকিত প্রশংসা করে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নেতা হিসেবে পেয়ে এই দেশের মানুষ সত্যিই ভাগ্যবান। আমার বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তাকে নিয়ে গর্ববোধ করতেন। তিনি এবং তার দল যে দক্ষতার সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে। এই করোনার মাঝেও দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ জিডিপি বাংলাদেশের। এগুলো জেনে আমাদের সত্যিই আনন্দ অনুভূত হয়।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তার এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নতি, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে উন্নতির মতো বিষয়গুলো এ দেশের মানুষের সামনে নতুন নতুন সম্ভাবনা এনে দিয়েছে।

শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করেই বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে, বাংলাদেশকে সুখী ও দারিদ্র্যমুক্ত করতে তিনি ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন।

বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, বাংলাদেশ অগ্রগতি ও ক্রমাগত উন্নয়নের দিকে স্থিরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মর্যাদা অর্জন করেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার বাংলাদেশ।

লেখক: সভাপতি, বাংলা বিভাগ ছাত্রলীগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।