ক্যাম্পাস

ভালোবাসাতে জীবন সুন্দর 

আজ পয়লা বসন্ত ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। বসন্তের দক্ষিণা হাওয়া বইছে। প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর দিন আজ। ভালোবাসার উচ্ছ্বাস আজ ছড়িয়ে পড়বে চারদিকে। যদিও ভালোবাসা একটি দিনের জন্য নয়। প্রতিটি দিনই ভালোবাসার সময়। ভালোবাসতে দিনক্ষণ লাগে না। ভালোবাসতে প্রয়োজন সুন্দর দুটি মন আর একে অপরকে বুঝতে পারার মানসিকতা। 

ভালোবাসা মানেই কিন্তু প্রেমিক-প্রেমিকা, যুগলবন্দী নয়। যে কাউকেই ভালোবাসা যায়। ভাইকে ভালোবাসা যায়, বোনকে ভালোবাসা যায়। মা-বাবা, পরিবার, বন্ধু-বান্ধবী যে কাউকেই ভালোবাসা যায়। যার সঙ্গে আপনার আত্মার মিল খুঁজে পান, তাকেই ভালোবাসা যায়। 

ভালোবাসা-বাসীর জন্য অনন্তকালের প্রয়োজন হয় না, একটি সুন্দর মুহূর্তই যথেষ্ট। এই একটি সুন্দর মুহূর্তের অনুভূতিই আপনাকে আরও কিছুকাল বাঁচার তাগিদ দিবে। ভালোবেসে আপনি বেঁচে থাকার নতুন প্রাণ খুঁজে পাবেন। 

এখন কথা হলো, মানুষ ভালোবাসে কেন?

আপনি কাউকে কেন ভালোবাসবেন? কি কারণে ভালোবাসবেন? ভালোবাসা কি খুবই প্রয়োজন? হ্যাঁ, আপনাকে বাঁচতে হলে ভালোবাসতে হবে। ভালোবাসা ছাড়া জীবন চলে না।

নিজেকে ভালো রাখতে: হ্যাঁ, নিজেকে ভালো রাখার জন্য আপনাকে ভালোবাসতে হবে। নিজেকে খুশি রাখার জন্য আপনাকে কাউকে ভালোবাসতে হবে। প্রাণবন্ত ও উৎফুল্ল থাকার জন্য আপনাকে ভালোবাসতে হবে। ভালোবাসবেন তো সেই মানুষকে যার সঙ্গে কথা বললে, আপনার মন ভালো হয়ে যায়। ভালোবাসবেন তো সেই মানুষকে যার কন্ঠের একটি শব্দ শুনার জন্য আপনি উদগ্রীব হয়ে থাকেন, যাকে একটি পলক দেখার জন্য আপনি অধীর আগ্রহে বসে থাকেন। এমন শতশত কারণে-অকারণে আপনি আপনাকে সুখী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে কাউকে ভালোবাসবেন। 

নিজেকে জানার জন্য: নিজেকে জানার জন্য হলেও আপনাকে কাউকে ভালোবাসা প্রয়োজন। আপনি মানুষ হিসেবে কেমন, কেমন আপনার ব্যবহার, সেটি বুঝার জন্য হলেও ভালোবাসা প্রয়োজন। কারণ, আপনি আপনার ভালোবাসার মানুষকে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে ভালো রাখতে চেষ্টা করবেন। পাশাপাশি আপনার ভালোবাসার মানুষটিও তাই করবে। আপনার কোনো ভুলক্রটি থাকলে প্রিয়জন সেটি আপনাকে ধরিয়ে দিবে। এতে করে নিজের সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারবেন। 

সফলতার জন্য: একজন ব্যক্তির সফলতার পেছনে তারা প্রিয়জনের মানসিক সাপোর্ট অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। আপনি আপনার কাজে যতোটা মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারবেন, আপনার কাজ ততো ভালো হবে। ভালো কাজ করতে পারলে সফলতা আসবেই। আর এই ভালো কাজ ও মনোযোগ দুটোই নির্ভর করে মানসিক চিন্তার উপর। প্রিয়জন সেই মানসিক প্রশান্তির নির্ভতার জায়গা। তাই, সফলতার পেছনে ভালোবাসার বিকল্প নেই। 

দুঃখকে ভাগ করে নিতে: দুঃখ থেকে রাগ, হতাশা, ভয়– এগুলো সৃষ্টি হয়। তাই নিজের দুঃখকে প্রিয়জনের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া প্রয়োজন। এতে দ্রুত পূর্বের ব্যর্থতা থেকে দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে সাফল্যের কোঠায় পৌঁছানো যায়। তাই, নিজের সুখের সঙ্গীর মতো প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে দুঃখটাকে কমিয়ে আনতে কিংবা দূর করে দিতে ভালোবাসা প্রয়োজন। 

নিঃসঙ্গতা এড়াতে: কোলাহল মুক্ত জায়গায় প্রিয়জনের পাশে বসে কোনোরকম কথাবার্তা ছাড়াই বসে দেখুন না, কেমন লাগে। আমাদের মাঝে এমন অনেকে রয়েছেন যারা বিভিন্ন কারণে হতাশায় ভুগছেন। তারা সবসময় একা থাকতে পছন্দ করে। নিঃসঙ্গ জীবন চলায় তাদের জীবন। এতে করে উল্টো জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। এই নিঃসঙ্গতা কাটাতে একজন সঙ্গী প্রয়োজন। পছন্দের সঙ্গীর সঙ্গে থাকলে সেই নিঃসঙ্গা কাটিয়ে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা সম্ভব। 

তবে, ভালোবাসার বিষয়টি কোনো কিছুর মাপকাঠি দিয়ে বিচার করা উচিত নয়। আমরা আমাদের পছন্দের মানুষকে ভালোবাসি, কারণে অকারণে ভালোবাসি। ভালো লাগে বিধায় ভালোবাসি। ভালো থাকতে চাই বিধায় ভালোবাসি। 

ভালোবাসার ফুল ফুটক সবার মনে। ভালোবাসা জেগে থাকুক সবার হৃদয়ে। ভালোবাসায় জড়িয়ে থাকুক পৃথিবী। 

লেখক: শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী।