ছেলেকে লিবিয়াতে মারপিট করে দেশে বাবাকে সেই ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায় চক্রের আরও দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে তাদের ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন— শরিয়তপুর সদর উপজেলার সলিপুর বেপারিপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম (৪০) ও টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার রাড়িকান্দি গ্রামের শাকিল (৪০)।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে এই চক্রের হোতা হাফিজুর রহমানকে (৪৫) ঢাকার নয়াপল্টন থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাকে বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল কারাগারে পাঠানো হয়েছে। হাফিজুর রহমান ঘাটাইল উপজেলার পোড়াবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা।
গ্রেপ্তার শফিকুল ও শাকিলকে ঘাটাইল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে র্যাব জানিয়েছে।
র্যাব-১৪ এর ৩নং কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের বুধবার বিকেলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পোড়াবাড়ী গ্রামের আব্দুল কদ্দুসের ছেলে লিটনকে ভালো বেতন ও সুযোগ সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে গত ৩ জানুয়ারি লিবিয়া পাঠায় হাফিজুর। লিবিয়ায় পৌছার পর হাফিজুরের সহযোগী অজ্ঞাতনামা কয়েকজন লিটনকে আটকে রাখে। তারা লিটনকে মারধর করে তাকে দিয়ে তার বাবার কাছে ফোন করান। তাকে বলতে বাধ্য করেন লিবিয়ায় ভালোভাবে পৌঁছেছে এবং ভালো আছে। হাফিজুরকে যেন ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেয়। লিটনের কথা মতো তার বাবা আব্দুল কদ্দুস ওই টাকা দিয়ে দেন হাফিজুরকে। পরবর্তীতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি লিটনের বাবাকে লিবিয়া থেকে ইমোতে ভিডিও কল দেওয়া হয়। সেখানে লিটনকে আটকে রেখে মারধর করার ভিডিও দেখানো হয়। তারা মুক্তিপণ বাবদ লিটনের বাবার কাছে ১৩ লাখ টাকা দাবি করেন। না দিলে লিটনকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।
এ খবর পাওয়ার পর র্যাব সদস্যরা এই চক্রের হোতা হাফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। হাফিজুর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানায়, তিনি তার সহযোগী শফিকুল এবং শাকিলের মাধ্যমে লিটনকে লিবিয়া পাঠায়। সেখানে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
লিটনের বাবা বাদী হয়ে মঙ্গলবার সকালে ঘাটাইল থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এই তিন জনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে হাফিজুরকে ঘাটাইল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল ইসলাম সরকার জানান, মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হওয়া হাফিজুরকে বুধবার আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হবে।