সারা বাংলা

স্কুল ভবনের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা, খোলা আকাশের নিচে পাঠদান 

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে মাঠে বসেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা। 

হরিপুর উপজেলায় কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন হলেও ভাতুরিয়া ইউনিয়নের টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবহেলায় আর অব্যবস্থাপনায় রয়ে গেছে। ফলে দিনের পর দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়টি। ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় তাই খোলা আকাশের নিচে পড়ালেখা করতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৩ সালে স্কুলটির জন্য একটি ভবন নির্মিত হয়। এরপর বিদ্যালয়টিতে ৩৪ বছর ধরে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্লাস করতে এসে আমাদের ভয়ে আর আতঙ্কে থাকতে হয়। অনেক সময় ভবনের প্লাস্টার আমাদের ওপর খসে পড়ে। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ঝুঁকি এড়াতে আমাদের মাঠে ক্লাস করান শিক্ষকরা।

স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী হিরা মনির বাবা হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়টি এতোটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে, মেয়েকে স্কুলে পাঠানোর পর বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত খুবই চিন্তিত থাকি। আমি সরকারকে বিনীত অনুরোধ করছি তারা যেন বিদ্যালয়টি দ্রুত সংস্কার করে দেয়।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজালাল বলেন, ‘বিদ্যালয়ে যোগদানের প্রায় ৩৪ বছর অতিক্রম হয়েছে। ভবনের নাজুক অবস্থা দেখে উপজেলা শিক্ষা বিভাগে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের নিয়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। বিদ্যালয়ে এসে সবসময়ই চিন্তায় থাকি কখন না জানি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৬ সালে উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিদ্যালয়ের জন্য নতুন ভবনের ব্যবস্থা করা হয়নি।’

বিদ্যালয়ের সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি সভাপতি হয়ে ব্যর্থ হয়েছি তা বলবো না, কারণ আমার আগেও যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা বহু চেষ্টা করেছেন স্কুল ভবনটি সংস্কারের জন্য। তারপরও ফলাফল আসেনি।’

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আজিজার রহমান বলেন, ‘টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আসলেই খুব ঝুঁকিপূর্ণ। বিদ্যালয়টি সংস্কারের ব্যাপারে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আশা করি দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।’