সারা বাংলা

প্লাস দিয়ে কিশোরের আঙুল কেটে নেওয়ার অভিযোগ

গাজীপুরের শ্রীপুরে চোর সন্দেহে সাগর (১৭) নামের এক কিশোরের হাতের দুটি আঙুল প্লাস দিয়ে কেটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় ওই কিশোরকে উদ্ধার করতে গেলে তার পরিবারের স্বজনরাও মারধরের শিকার হন। এদিকে ঘটনার পরপরই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন আলী। 

এর আগে, সোবমার (২৭ মার্চ) রাত ১০টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লোহাগাছ গ্রামের ফালু মার্কেটে ঘটনাটি ঘটে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শ্রীপুর পৌরসভার লোহাগাছ গ্রামের সাহাব উদ্দিনের ছেলে মোজাম্মেল হক (২৭)। তিনি শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক। অপর দুজন একই গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে শরিফ (৩৫) ও নূরুল ইসলাম রাকিব (৩০)।

নির্যাতনের শিকার সাগর শ্রীপুর পৌরসভার লোহাগাছ গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে। 

ভুক্তভোগী কিশোরের মা আসমা আক্তার বলেন, গতকাল রাতে আমার ছেলে ইফতার শেষে তারাবির নামাজ পড়তে মসজিদে যায়। কিছুক্ষণ পর অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা মোজ্জামেল হকের নেতৃত্বে ১০/১২ জন যুবক স্থানীয় এক শিশুকে দিয়ে আমার ছেলে সাগরকে মসজিদে ডাকতে পাঠায়। এরপর তারা আমার ছেলেকে ফালু মার্কেটে আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হকের অফিসের সামনে এনে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে। তারা প্লাস দিয়ে আমার ছেলের বাম হাতের দুটি আঙুল কেটে নেয়। বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরে দৌঁড়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে অভিযুক্তরা আমাকে ও আমার বোনকেও মারধর করে। এসময় চুরি করেছে বলে তারা সাগরকে রড দিয়ে আবারো মারধর করতে থাকে। নির্যাতনে আমার ছেলের পায়ের হাড় ভেঙ্গে গেছে। 

ফালু মার্কেটের এক দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন দোকানপাটে চুরির ঘটনা ঘটেছে। আমি শুনেছি কোনো এক স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরায় নির্যাতনের শিকার সাগরকে চুরি করতে দেখা গেছে বলে জানা গেছে। এই সন্দেহে কয়েকজন মিলে তাকে তুলে আনে। মসজিদ থেকে তাকে ডেকে আনা হয়েছে কিনা আমি জানি না। 

স্থানীয় অপর এক বাসিন্দা বলেন, মারধরের সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম। ছেলেটিকে অনেক মারা হয়েছে তা আমি দেখেছি। তবে চুরি করছে কিনা আমি জানি না। আমি শুনছি কয়েকটি দোকানে চুরি করার চেষ্টা করছে সাগর।

শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নূরে আলম মোল্লা বলেন, চোর সন্দেহে একজনকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মোজাম্মেল হক পৌর আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক। তিনি যেটা করেছেন সেটা একান্তই তার ব্যক্তিগত বিষয়। তার ওই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।

এসআই রিপন আলী বলেন, খবর পেয়েই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আজ দুপুরে ৫৪ ধারায় গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়। ভুক্তভোগীর পরিবারকে থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আসামিদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।