গত চার বছর ধরে গড়ে প্রতিদিন ৫০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি গ্রাহককে নিজেদের নেটওয়ার্কে যুক্ত করেছে দেশের অন্যতম সেরা মোবাইল আর্থিক প্রতিষ্ঠান নগদ।
২০১৯ সালের ২৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাণিজ্যিক সেবা শুরু করার পর নিরবছিন্ন সেবা দিচ্ছে নগদ। এই সময়ে নগদের নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭ কোটি ৪৩ লাখ। বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে আর্থিকভাবে অন্তর্ভূক্ত করার কারণে দেশের অর্থনীতিতে ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটেছে।
এই বিশাল গ্রাহকসংখ্যা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এখন গড়ে দৈনিক এক হাজার কোটি টাকা লেনদেন করছে। কোনো কোনো দিন এই লেনদেনের পরিমাণ হাজার কোটি টাকাও ছাড়িয়েছে যাচ্ছে। উদ্বোধনের পর থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল অংশীদারত্বের সেবা হিসেবে খুব দ্রুত নগদের প্রসার ঘটতে থাকে। ফলে অল্প সময়ে দেশের অন্যতম সেরা মোবাইল আর্থিক সেবায় পরিণত হয়েছে নগদ।
বিভিন্ন সেবায় খরচ কমানোর এবং অনেক সেবা নিখরচায় সেবা দেওয়ার কারণে নগদ প্রতি বছর গ্রাহকের প্রায় এক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করছে।
চার বছরের এই অনন্য যাত্রা নিয়ে বলতে গিয়ে নগদ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘আমরা গ্রাহকের স্বাচ্ছন্দ্য তৈরি করতে চেয়েছি এবং চেয়েছি তাদের আর্থিক লেনদেনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে বাজারের সবচেয়ে কম খরচে গুণগত সেবা দিতে পারছি আমরা। ফলে এই খাতে একটি প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতির সূচনা হয়েছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার পর এখন আমরা গ্রাহকদের জন্য পরিপূর্ণ ডিজিটাল জীবনযাপন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি।’
যাত্রা শুরু করার পর থেকে দ্রুততম সময়ে একের পর এক মাইলফলক অর্জন করেছে নগদ। এই সময়ে তাদের সেরা উদ্ভাবন ছিল ইলেক্ট্রনিক কেওয়াইসি উদ্ভাবন। গ্রাহক নিবন্ধনের জন্য দেশের প্রথম ই-কেওয়াইসি’র প্রচলন এতটাই সাড়া ফেলে যে, ব্যাংকসহ প্রায় সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন এই পদ্ধতি গ্রহণ করে তাদের খরচ কমিয়েছে।
এরপর যেকোনো মোবাইল ফোন *১৬৭# চেপে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রচলন করে নগদ। এই উদ্ভাবন আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে তরান্বিত করেছে। এই উদ্ভাবনের ফলশ্রুতিতে নগদ আন্তর্জাতিক স্তরে বেশকিছু সম্মাননা ও স্বীকৃতি পেয়েছে।
মূলত কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারা এবং বাজারের সবচেয়ে কম খরচে লেনদেন করতে পারার জন্য দ্রুত গ্রাহক অর্জন করতে থাকে নগদ। ফলে মাত্র চার বছরের মধ্যে তাদের গ্রাহক সংখ্যা ৭ কোটি ৪৩ লাখে পরিণত হয়। আর সব ক্ষেত্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে নগদ-এর ক্যাশ আউট চার্জ এখন বাজারের সবচেয়ে কম। এ ছাড়া সেন্ড মানি ও বিভিন্ন পরিষেবার বিল বিনামূল্যে প্রদান শুরু করে নগদ। পরে অনেকেই নগদ-কে অনুসরণ করে।
গত চার বছরে নগদের আরেকটা উল্লেখযোগ্য কাজ হলো সরকারের ভাতা ও আর্থিক সহায়তার বিতরণ ব্যবস্থাকে ডিজিটাল করা। গত দুই বছরে সরকারের যত ভাতা বিতরণ হয়েছে, তার সিংহভাগ নগদ-এর মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মোট ভাতার ৭৫ শতাংশই বিতরণ করে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তির প্রায় শতভাগ নগদ-এর মাধ্যমে বিতরণ করছে। সব মিলে দুই বছরে নগদ-এর মাধ্যমে সরকার প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করেছে। নগদ-এ সার্ভিস চার্জ কম হওয়ায় এসব ভাতা বিতরণে সরকারের খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে।
সামনের দিনে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠাসহ গ্রাহককের দৈনন্দিন জীবনের সকল লেনদেনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে কাজ করছে।