দেহঘড়ি

মাম্পস সারান ঘরোয়া চিকিৎসায়

মাম্পস হলো ভাইরাসজনিত একটি রোগ। কানের নিচে, চোয়ালের পেছনে যে প্যারোটিড গ্রন্থি থাকে, মাম্পস রোগে সেই গ্রন্থি আক্রান্ত হয় এবং বেদনাদায়ক ফোলা সৃষ্টি হয়। গ্রামে-গঞ্জে এই রোগকে বলা হয় গাল ফোলা রোগ।

সাধারণত শিশুদের এই রোগ বেশি হয়ে থাকে। তবে যে কোনো বয়সীই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। মাম্পস হলে সাধারণত সপ্তাহখানেকের আগে সারে না। তবে এই রোগ একবার হলে পরে সাধারণত আর হয় না। 

মাম্পস ছোঁয়াচে একটি রোগ। মূলত লালা এবং স্পর্শের মাধ্য়মে এই রোগ একজনের থেকে অনেকের মধ্য়ে ছড়িয়ে যায়। তাই সংক্রামিত ব্যক্তির জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, হাঁচি ও কাশির সময় মুখ এবং নাক ঢেলে রাখা যাতে অন্য ব্যক্তির মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে না পড়ে। 

লক্ষণ 

এই রোগে আক্রান্ত হলে গলা ফুলে যাওয়া, গলায় এবং মুখে প্রচন্ড যন্ত্রণা, মাথা ব্য়থা, ক্ষিদে কমে যাওয়া, ক্লান্তি, হাল্কা জ্বর এবং বারংবার বমি হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়। এই সময় কথা বলতে এবং খাবার খেতে খুব কষ্ট হয়। ঠিক সময়ে যদি এই রোগের চিকিৎসা না করা হয় তাহলে জটিলতা বাড়ার আশঙ্কা থাকে।

মাম্পসের ঘরোয়া চিকিৎসা 

এই রোগ সারাতে ঘরোয়া পদ্ধতিও কাজে আসে। এ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।

আদা: এতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিভাইরাল প্রপাটিজ থাকায় মাম্পসের যন্ত্রণা কমাতে দারুন কাজে আসে। আদার মূল গুঁড়া করে লাগান। দেখবেন যন্ত্রণা কমে যাবে। এছাড়া আদা খেতে পারেন। তাতেও সমান কাজ দেবে।

হরিতকী: পানির সঙ্গে হরিতকী গুঁড়া মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। তারপর গলার যে অংশ ফুলে গেছে সেখানে লাগান। দেখবেন আরাম পাবেন। হরিতকীতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান থাকার কারণেই মামসের প্রকোপ কমাতে এটি ভালো কাজ দেয়।

অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরার উপকারিতা নানা ক্ষেত্রেই রয়েছে। মাম্পসের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে অল্প হলুদ মিশিয়ে গলায় লাগান। দেখবেন যন্ত্রণা কমে যাবে।

শতমূলী: সম পরিমাণে শতমূলী বীজ এবং মেথি নিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। তারপর সেটি ফোলা জায়গায় লাগান। যন্ত্রণা কমে যাবে।

ডুমুর পাতা: ঘি বা তেলে কয়েকটি ডুমুর পাতা ডুবিয়ে গরম করে নিন। তারপর পাতাগুলো গলার ফোলা জায়গায় ৩০ মিনিট রাখুন। এমনটা প্রতিদিন করলে অল্প দিনেই যন্ত্রণা দূরে পালাবে।

জটিলতা

সাধারণত এই রোগ সেরে গেলেও কোনো ক্ষেত্রে ভাইরাসের সংখ্যা বেশি হলে তা অন্যান্য অঙ্গ যেমন মস্তিষ্ক, অগ্ন্যাশয়, জননাঙ্গ প্রভৃতি আক্রান্ত করে জটিল আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষ করে জ্বর, অচেতন হওয়া, স্বাভাবিক জ্ঞান লোপ পাওয়া, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, তীব্র পেটের ব্যথা, বমি, পুরুষদের অণ্ডকোষে ব্যথা, নারীদের তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এমন কোনো লক্ষণ দেখা গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

তথ্যসূত্র: বোল্ড স্কাই