বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মেট্রোরেল স্টেশনে চালু হচ্ছে স্মার্ট ডেলিভারি লকার

রাজধানীর মেট্রোরেল স্টেশনে শিগগিরই চালু হতে চলেছে সম্পূর্ণ দেশের প্রযুক্তিতে নির্মিত ও পরিচালিত স্মার্ট ডেলিভারি লকার সেবা।

এই স্বয়ংক্রিয় ডেলিভারি বক্সের মাধ্যমে মেট্রোরেল ব্যবহারকারীরা তাদের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে অর্ডার করা পণ্যের ডেলিভারি কোনো ডেলিভারিম্যানের উপস্থিতি ছাড়াই শুধু স্মার্টফোনের মাধ্যমে ওটিপির দ্বারা খুব সহজে এবং সুবিধাজনক সময়ে মেট্রোরেল স্টেশনে স্থাপিত এই স্মার্ট লকার থেকে নিজে সংগ্রহ করতে পারবেন।

এ লক্ষ্যে রোববার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর প্রবাসী কল্যাণ ভবনে এটুআই এবং ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)-এর মধ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর এবং ডিএমটিসিএল-এর সচিব (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আবদুর রউফ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

এই চুক্তির আওতায় এটুআই এমআরটি-৬ এর অন্তর্গত সব মেট্রোরেল স্টেশনের সুনির্দিষ্ট কিছু জায়গা ডিএমটিসিএল-এর ভাড়া/ইজারা নীতিমালা ২০২৩ এ বর্ণিত শর্তাগুলো মেনে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শর্তসাপেক্ষে ব্যবহার করবে এটুআই। ইন্টারনেট-সংযোগ ভিত্তিক আইওটি প্রযুক্তি দেশের প্রথম এই স্মার্ট-ডেলিভারি লকার সিস্টেম-এর অবকাঠামোর স্থাপন ও পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা হবে।

ডিএমটিসিএল-এটুআই এর মধ্যকার চুক্তির ফলে, মেট্রোরেল ব্যবহারকারী যাত্রীরা দেশীয় প্রসিদ্ধ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে তাদের ক্রয়কৃত পণ্য সমূহের ডেলিভারি তাদের নিয়মিত দৈনিক মেট্রোরেল ভ্রমণের আগে বা পরে সুবিধামত সময়ে মেট্রোরেল স্টেশনে স্থাপিত স্মার্ট লকার ডিজিবক্স থেকেই সংগ্রহ করতে পারবেন। এজন্য নিজ স্মার্টফোনে প্রাপ্ত ওটিপি (একবার ব্যবহারযোগ্য গোপন সংখ্যা) মেট্রোরেল স্টেশনে অবস্থিত স্মার্ট লকারের ডিসপ্লে স্ক্রিনে প্রবেশ করালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট লকারটি খুলে যাবে এবং ক্রেতা তার ক্রয়কৃত পণ্য সেই লকার থেকে নিজেই সংগ্রহ করতে পারবেন। এতে কোনো ডেলিভারিম্যানের উপস্থিতির প্রয়োজন হচ্ছে না। মেট্রোরেলের যাত্রীরা এই উদ্ভাবনী প্রযুক্তির মাধ্যমে উপকৃত হবেন বলে আশা করছে এটুআই এবং ডিএমটিসিএল। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রযুক্তিনির্ভর এই ধরনের যেকোনো উদ্যোগের সঙ্গে এমআরটি পাশে থাকবে। এর সুফল দেশের মানুষ ভবিষ্যতে পাবে।’

ডিএমটিসিএল এর কোম্পানি সচিব (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, ‘মেট্রোরেল ব্যবহারকারীদের স্মার্ট বাংলাদেশের সুবিধা দেবার লক্ষ্যে প্রতিটি মেট্রোরেল স্টেশনে এই ডিজিবক্স স্থাপনের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রাকে আরো স্মার্ট করার লক্ষেই আজকের এই চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ।’   

এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ শুরু করেছি। আমরা নিজেদের প্রযুক্তিতে নিজ দক্ষ জনবলে নিজেদের মতো করে নিজেদের দেশের জন্য সমাধানগুলো তৈরি করতে চাই।’  

ডিজিবক্সের নিরাপত্তার জন্য সার্বিক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত ডিএমটিসিএল, এমনটাই জানিয়েছে ডিএমটিসিএল-এর এমআরটি লাইন-৬ এর প্রকল্প পরিচালক মো. আফতাবউদ্দিন তালুকদার। তিনি নতুন এই উদ্যোগ নিয়ে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর প্রকল্প পরিচালক হিসেবে আমরা মোট ১৭টি স্টেশন নির্মাণ করতে যাচ্ছি, প্রতিটি স্টেশনে এরকম অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নতুন নতুন ডিজিটাইজেশনের মধ্য দিয়ে এটুআই-এর মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের ধারাবাহিকতায় আমরা সহযোগী হিসেবে থাকব।’ 

মেট্রো স্টেশনে এটুআই-এর স্মার্ট লকার সেবা শুধু পণ্য লেনদেনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। ধারাবাহিকভাবে সরকারের যাবতীয় ডিজিটাল সেবা ও লেনদেনও এর আওতাভুক্ত হবে জানান এটুআই- প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী।