দেহঘড়ি

উদ্বেগ-আতঙ্কে হৃদস্পন্দনের গতি কমানোর উপায়

অত্যাধিক উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা থেকে অনেকেরই হার্ট রেট বা হৃদস্পন্দনের গতি অতিমাত্রায় বেড়ে যায়, বুক ধড়ফড় করে ও শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। যা পুরো শরীরের ওপরেই প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে হৃদযন্ত্রের ওপর। 

একজন সুস্থ মানুষের স্বাভাবিক হার্ট রেট প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বিটস। এই সীমা অতিক্রম করলে তা অস্বাভাবিক বা বিপজ্জনক হার্ট রেট হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত উদ্বেগ ও মানসিক চাপে হার্টের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। এটা সময় পরিক্রমায় হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি ফাউন্ডেশনের একটি মেটা-অ্যানালাইসিসে পাওয়া গেছে, উদ্বেগে জর্জরিত লোকদের করোনারি আর্টারি ডিজিজের ঝুঁকি ২৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এটা হলো হার্টের সবচেয়ে প্রচলিত রোগ। কারেন্ট সাইকিয়াট্রি রিপোর্টসে প্রকাশিত রিভিউ থেকে জানা গেছে, উদ্বেগ ব্যাধি থেকে হার্ট ফেইলিউর ও রক্তনালীর রোগ হতে পারে।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত হার্ট রেট কিছু লোকের স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিউর, জ্ঞান হারানো ও হঠাৎ মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

অ্যানজাইটি অ্যান্ড ডিপ্রেশন অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- সীমাহীন অসঙ্গত আতঙ্কে প্যানিক অ্যাটাক হওয়ার সময় হার্ট রেট বেড়ে যায় এবং এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে বুকে ব্যথা ও বুক ধড়ফড় করে। প্যানিক অ্যাটাকের সময় হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে মনে করে ভুল হতে পারে, কারণ উপসর্গগত মিল আছে।

যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন হৃদস্পন্দন

হৃদস্পন্দনের গতি বা হার্ট রেট বেড়ে গেলে তা কমানোর একটি কার্যকরী উপায় হলো- গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, গভীর শ্বাসক্রিয়ায় হার্ট রেট কমে এবং উদ্বেগও কমে যায়।

গভীর শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য একটি নির্জন স্থানে বসে পড়ুন। অথবা শুয়ে পড়ুন। তারপর চোখ বন্ধ করুন। এবার নাক দিয়ে ধীরে ধীরে লম্বা দম (শ্বাস) টানুন। আপনি এই ধরনের শ্বাসক্রিয়ায় নতুন হলে বুকের ওপর একটি হাত রাখুন। এতে দম টানার সময় বুক ফুলে ওঠা অনুভব করতে পারবেন। অতঃপর মুখের মাধ্যমে ধীরে ধীরে দম (শ্বাস) ছাড়ুন। পুরো প্রক্রিয়াটি প্রয়োজন অনুসারে কয়েকবার করুন।