ঐতিহ্যবাহী আবাহনীর লিমিটেড নাকি শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব? মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত নাকি নুরুল হাসান সোহান? ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ডিপিডিসিএল) চলতি আসরে ট্রফি নিয়ে উল্লাসে কে মাতবেন? কারা মাতবেন? রাত পোহালেই অলিখিত ফাইনালে তথা শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে আবাহনী-শেখ জামাল। এই ম্যাচেই নির্ধারণ হবে ট্রফি যাচ্ছে কার ঘরে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার মুখোমুখি হবে মোসাদ্দেক-সোহানের দল। খেলাটি শুরু হবে সকাল ৯টায়। প্রথম রাউন্ড-সুপার লিগসহ দুই দলের ১৫ ম্যাচ শেষে পয়েন্ট সমান ২৬। কাল যে জিতবে ট্রফি নিয়ে উল্লাসে মাতবেন তারাই।
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে আগামীকাল হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। যদি বৃষ্টিতে কোনো কারণে ম্যাচ না হয় তাহলে পরদিন রিজার্ভ ডে’তে খেলা গড়াবে। রিজার্ভ ডেতেও যদি না হয় তাহলে বাইলজ অনুযায়ী হেড টু হেডে এগিয়ে থাকায় শেখ জামাল চ্যাম্পিয়ন হবে।
চলতি আসরে দুটি দলই হেরেছে দুই ম্যাচ করে। প্রথম রাউন্ডে আবাহনী হারে শেখ জামালের কাছে আর সুপার লিগে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের কাছে। আর শেখ জামাল প্রথম রাউন্ডে হেরেছে মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেডের বিপক্ষে আর সুপার লিগে আবাহনীর মতো তারাও হেরেছে গাজীর কাছে।
চলতি আসরে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খেলছে শেখ জামাল। তাদের সামনে সুযোগ টানা দ্বিতীয়বারের মতো ট্রফি ঘরে তোলা। অন্যদিকে ২০২১ মৌসুমে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সবশেষ ট্রফি জেতা আবাহনীর সামনে ট্রফি পুনুরাদ্ধারের হাতছানি। ঢাকা লিগে অন্যতম সফল দল আবাহনী, এখন পর্যন্ত তারা ৮বার এই ট্রফি জিতেছে। অন্যদিকে শেখ জামাল জিতলে এটি হবে দ্বিতীয় ট্রফি।
শেখ জামাল মাঠে নামবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে। শুক্রবার অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের অধিনায়ক সোহান বলেন, ‘যেহেতু (আমরা) ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন; অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবো। ওটাই আসলে ফোকাস ছিল। আমার কাছে মনে হয় যে যারা আমরা একসঙ্গে খেলছি, অনেক কঠোর পরিশ্রম করছি। ব্যক্তিগত চিন্তা না করে দলের চিন্তা করছে (সবাই)। যেটা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেছে।’
অন্যদিকে আবাহনী অধিনায়ক মোসাদ্দেকও আশাবাদী চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে, ‘এত বড় একটা টুর্নামেন্টে আপনি কখনো ওভাবে আশা করতে পারবেন না যে আপনি ১৬ ম্যাচের ১৬টা জিতবেন। এটা আসলেই খুবই কঠিন একটা কাজ। সো অবশ্যই দুটা তিনটা ম্যাচ এদিকে হারা জেতা থাকবেই, কিন্তু একই দিকে যদি দুটা দলের পয়েন্ট সমান যেহেতু, দর্শকের জন্যও একটা ভালো ম্যাচ যে একটা ফাইনাল ম্যাচ তারা দেখবে। আমি অবশ্যই আশাবাদী ভালো কিছু হবে।’
জাতীয় দলের খেলা থাকায় শেখ জামাল এই অলিখিত ফাইনালে পাবে না তাওহীদ হৃদয়, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও ইবাদত হোসেনদের। প্রথম রাউন্ডে আবাহনীকে হারানোর ম্যাচে সর্বোচ্চ ৭২ রান করেছিলেন হৃদয়। যেহেতু তারা নেই তাদের কথা ভাবছেন না সোহান। দলগতভাবে সাফল্য পেতে মরিয়া তিনি। প্রতিপক্ষে কেন না ভেবে নিজেদের সেরাটা দিতে চান। এই অলিখিত ফাইনাল নিয়ে সোহানরা রোমাঞ্চিতও না আবার কোনো চাপও নিচ্ছেন না। প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকে ট্রফি তুলতে চান নিজেদের ঘরে।
‘চাপ আসলে নেওয়ার কিছু নাই। যেটা আপনারা বললেন যে আমরা হয়তো খাতা-কলমে খুব ভালো একটা দল ওভাবে ছিলাম না, কিন্তু আল্টিমেটলি সবাই ভালো করছে। আমরা যে প্রক্রিয়াটা অনুসরণ করে এসেছি, এটাই ফলো করার চেষ্টা করব’-এভাবেই বলছিলেন সোহান।
শেখ জামালে হৃদয়ের মতো ক্রিকেটাররা না থাকায় এটাকে বাড়তি সুযোগ হিসেবে দেখছেন মোসাদ্দেক। তবে তাদের ছাড়াই শেখ জামাল ধারাবাহিকতা ধরে রাখায় এই ম্যাচটিতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে বলে মনে করছেন আবাহনীর অধিনায়ক।
‘দেখেন শেখ জামালের যে খেলোয়াড়রা দলের সঙ্গে নেই, তারা ছাড়াও শেখ জামাল মোটামুটি একটা ছাড়া সবগুলো ম্যাচ জিতেছে। অবশ্যই সুবিধা যদি বলেন, তাদের মূল দু’তিনটা খেলোয়াড় নেই, অবশ্যই সুবিধাতো আছেই। এখন টিম হিসেবে দুটা টিমই ভালো, আমি আশা করতেছি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা ম্যাচ হবে।’