ঘূর্ণিঝড় মোখা

কক্সবাজারে মোখার তীব্রতা কমেছে

কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত বহাল থাকলেও ঘূর্ণিঝড় মোখার তীব্রতা কমেছে। এর অগ্রভাগ উপকূল অতিক্রম করেছে, শেষ ভাগ অতিক্রমের পথে। কক্সবাজারে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটারে নেমেছে। রোববার (১৪ মে) দুপুরে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। সন্ধ্যার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি সম্পূর্ণ উপকূলে চলে আসবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

রোববার (১৪ মে) বিকেল ৪টা ৪২ মিনিটে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘সন্ধ্যা ৬টা ৩৩ মিনিটের দিকে ঘূর্ণিঝড়টি পরিপূর্ণভাবে উপকূলে চলে আসবে। টেকনাফ এবং সেন্টমার্টিনে বাতাস একটু বেশি থাকলেও কক্সবাজার সদরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে বাতাসের বেগ অনেক কমেছে।

তিনি জানান, দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কক্সবাজারে মাত্র ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বিকেল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের রেকর্ড এখনো তৈরি করা হয়নি।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ২ লাখ ৩৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। সকালে কিছু কিছু মানুষ বাড়ি চলে গেছেন বলে জানিয়েছেন কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা মো. বশির উদ্দিন।

ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা কমে আসার খবরে কক্সবাজার পৌর প্রিপ্যারেটরি আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা শহরের সমিতি পাড়ার বাসিন্দা জিয়াবুল করিম বলেন, ‘সারা রাত ঘুমাইনি। আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়েছি, ঘূর্ণিঝড় মোখা থেকে যেন আমরা রক্ষা পাই। কিছুক্ষণ আগে রেড ক্রিসেন্টের এক স্বেচ্ছাসেবকের কাছে শুনেছি, মোখা আমাদের দিক থেকে অন্যত্রে চলে যাচ্ছে। তখন খুব ভালো লাগলো। এখন আশায় বসে আছি, পরিস্থিতি শান্ত হলে বাড়ি ফিরব।’

কুতুবদিয়া পাড়ার তাহেরা বেগম বলেন, ‘বাড়িতে পুরুষ বলতে শুধু আমার ১৬ বছরের এক ছেলে আছে। বাকি তিনজন নারী। তাদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে অনেক কষ্ট হয়েছি। সারাটা সময় কেটেছে এই ভেবে যে, কখন ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কমে যাবে। অবশেষে সুখবর শুনলাম। সন্ধ্যার পরে নাকি মোখা চলে যাবে। আমাদের আঘাত করতে পারবে না। কথাটি শোনার পর থেকে ভালো লাগছে।’

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখা সেন্টমার্টিনে প্রভাব ফেলছিল। তবে, সেখানে দু-একজন আহত ছাড়া প্রাণহানি বা বড় ধরনের দুর্ঘটনার খবর আমাদের কাছে আসেনি। কক্সবাজারের পরিস্থিতি সকাল-দুপুরের চেয়ে এখন একটু ভালো দেখা যাচ্ছে। আশা করছি, সন্ধ্যার দিকে মোখার প্রভাব কমে যাবে। যেসব মানুষ জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে তাদের সার্বক্ষণিক সেবা দেওয়া হচ্ছে। তাদের সেবায় সেখানে স্বেচ্ছাসেবক ও মেডিক্যাল টিম আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে বা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে গেলে সিদ্ধান্ত ক্রমে আশ্রিত মানুষগুলে বাড়ি ফিরতে পারবে।’